Home »
মাশরুম
» শেকৃবিতে পাশ্চাত্যের অভিজাত বাটন মাশরুম চাষ
পাশ্চাত্যের অভিজাত বাটন মাশরুমের চাষ এখন রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সফলভাবে হচ্ছে। যা বাংলাদেশের আবহাওয়ায় চাষ হওয়া প্রথম বাটন মাশরুম। এ অসাধ্যকে সম্ভব করেছেন শেকৃবি প্রাণরসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ। দীর্ঘ দুই বছর ধরে তিনি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় বাটন মাশরুম উত্পাদনের জন্য গবেষণা চালিয়েছেন। বাংলাদেশ একাডেমীক অব সায়েন্স ও ইউএসডিএ অর্থায়নে এবার শীতে সাফল্যজনকভাবে উত্পাদন করেছেন বিশ্বের বহুল আলোচিত এই মাশরুম। এই বাটন মাশরুমের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এতে অধিক প্রোটিন, স্বল্প চর্বি, অধিক খনিজ লবণ থাকে। যা বয়স্কদের জন্য খুবই উপকারী।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, সারা বিশ্বে চার ধরনের মাশরুম শিল্পজাতকরণের জন্য চাষ করা হচ্ছে। এগুলো হলো হোয়াইট বাটন, ওয়েস্টার, শিতাকে ও স্ট্র মাশরুম। এর মধ্যে বাটন মাশরুম শীতপ্রধান দেশের মাশরুম হিসেবে পরিচিত। যা ভারতীয় উপমহাদেশে বিশেষ করে ভারতের হিমাচল প্রদেশে এর বেশ চাষ হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশে এই বাটন মাশরুম চাষ হচ্ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা এই বাটন মাশরুম চাষ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এই প্রেক্ষিতে ড. নিরদ চন্দ্র সরকার ও মো. হাফিজুর রহমানের সহযোগিতায় এবারই প্রথম এই শীতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে হোয়াইট বাটন মাশরুমের ভালো ফলন হয়েছে। আশা করছি এখন থেকে নিয়মিতভাবে এই মাশরুম চাষ করা যাবে এবং কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে এই মাশরুম চাষ করতে পারবে।
মাশরুমে চাষ প্রণালী সম্পর্কে তিনি বলেন, ধান বা গমের খড়ের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকার সার মিশিয়ে এক মাস ধরে কম্পোস্ট তৈরি করতে হয়। তারপর সেই কম্পোস্টের মধ্যে বাটন মাশরুমের বীজ ছড়িয়ে চাষ ঘরে রেখে দিতে হয়। বাটন মাশরুমের মাইসেলিয়াম বৃদ্ধি শেষে কেজিং করতে হয়। কেজিং করার ১৫-১৭ দিনের মধ্যে বাটন মাশরুম উত্পাদন শুরু হয়। ড. কামাল আরও বলেন, অনেক গুনে গুনান্বিত বাটন মাশরুম চাষ বেশ কষ্টসাধ্য। এই মাশরুমের মাইসেলিয়াম বৃদ্ধির জন্য ২২-২৮ সে. তাপমাত্রার প্রয়োজন এবং ফুটিংবডি উত্পাদনের জন্য প্রয়োজন ১৪-১৬ সে. তাপমাত্রা কিন্তু আমরা ১৮-২০ সে. তাপমাত্রায় ফ্রুটিংবডি উত্পাদন করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া বাটন মাশরুম উত্পাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। বাটন মাশরুমের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো অধিক প্রোটিন, স্বল্প চর্বি, অধিক খনিজ লবণ ও বেশকিছু বিশেষ খাদ্যপ্রাণ সমৃদ্ধ যা বয়স্কদের জন্য খুবই উপকারী। পাশ্চাত্যের অভিজাত বাটন মাশরুম এখন বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে যা ভাবতেই ভালো লাগে। ড. কামাল আরও বলেন, বাটন মাশরুম চাষ পদ্ধতি এখন আমাদের আয়ত্তে। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে শীতকালে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে চাষ করা সম্ভব এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে বাটন মাশরুম চাষ করার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। সাফল্যজনকভাবে বাটন মাশরুমের চাষ দেশের প্রোটিনের চাহিদা মেটানো ছাড়াও রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।
0 comments:
মন্তব্য করুন