উড়োজাহাজের ইঞ্জিনিয়ার



ছোটবেলায় জীবনের লক্ষ্য লিখতে গিয়ে অনেকেই পরীক্ষার খাতায় ডাক্তার হওয়ার কথা লিখেছেন। এও একধরনের ডাক্তারি। তবে মানুষের না, উড়োজাহাজের। ওড়ার আগে এবং অবতরণের পরে বিমানের দায়িত্বে থাকেন বিমান প্রকৌশলীরা। এ সময় বিমানের রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচর্যা বা কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা সমাধানের দায়িত্ব বিমান প্রকৌশলীদের। আকাশে পাড়ি দেওয়ার আগে বিমান পরীক্ষা ও সব বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে চূড়ান্ত ইন্সপেকশন করেন তাঁরা। অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটেশনাল ফ্লাইট ডাইনামিক ইঞ্জিনিয়ার, অ্যারোস্পেস ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার, অ্যারোস্পেস ম্যামেটিয়াল ইঞ্জিনিয়ারসহ বিভিন্ন পদে কাজ করেন উড়োজাহাজ ইঞ্জিনিয়াররা।

কাজের ক্ষেত্র ও আয়
বর্তমানে দেশ ও বিদেশে দক্ষ উড়োজাহাজ ইঞ্জিনিয়ারদের বেশ চাহিদা। জাতীয় বিমান সংস্থাসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এয়ারলাইনসে অনেক শূন্য পদ আছে। কাজের যোগ্যতা প্রমাণ করলেই রয়েছে চাকরির সুযোগ। প্রাথমিক অবস্থায় যেকোনো প্রতিষ্ঠানে মাসিক আয় প্রায় ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। অভিজ্ঞতা অর্জনের পর বেতন কাঠামো ৬০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। পাঁচ-ছয় বছরের ব্যবধানে একজন দক্ষ অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারের বেতন দুই লাখ টাকা ছাড়িয়ে যায়।

যোগ্যতা
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস হতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিকে পদার্থবিজ্ঞান ও গণিত এ দুটি বিষয় থাকতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মোট জিপিএ থাকতে হবে কমপক্ষে।  এ ছাড়া ইংরেজি বলা ও লেখায় দক্ষ হতে হবে। যাঁরা এসএসসি পাস করেছেন তাঁরাও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। উড়োজাহাজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

যেসব বিষয় পড়ানো হয়
প্রতিষ্ঠান ও কোর্সভেদে উড়োজাহাজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের পাঠ্য বিষয়ের কিছুটা তারতম্য হয়। তবে এ কোর্সের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছে থিওরি অব ফ্লাইট, এয়ারক্রাফট বেসিক ইলেকট্রিসিটি, অ্যারো ডায়নামিকস, এয়ারক্রাফট হার্ডওয়্যার অ্যান্ড ম্যাটারিয়ালস, অ্যারো ইঞ্জিন কনস্ট্রাকশন, এয়ারক্রাফট ফুয়েল অ্যান্ড লুব্রিকেন্টস সিস্টেম, ডিজিটাল ইলেকট্রনিকস, এয়ার ক্রাফট ল্যান্ডিং গিয়ার, স্ট্রাকচারাল রিপিয়ার, এয়ারক্রাফট গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং অ্যান্ড সেফটি সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট, ফ্লুইড মেকানিকস, অ্যাভিয়েশন সেফটি, এয়ারক্রাফট কম্পোজিট ম্যাটারিয়াল এবং এয়ারক্রাফট সিস্টেম প্রিন্সিপাল।

ভর্তি হবেন কোথায়
বর্তমানে দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা বিমান প্রকৌশল বিষয়ে পড়াশোনা করায়। এসব প্রতিষ্ঠান অ্যাভিয়েশন অথরিটি, কারিগরি বোর্ড কিংবা এডেক্সেলের অনুমতি নিয়ে কার্যক্রম চালায়। তাই ভর্তির আগে ভালোভাবে খোঁজখবর নিতে হবে।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি (এনআইইটি)
মেয়াদ : চার বছর।
যোগ্যতা : বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি বা সমমান।
মোট খরচ : দুই লাখ ৯৮ হাজার টাকা।
যোগাযোগ : ২৯/১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা।
ফোন : ৮১৮৯৬৩৭, ০১৯৭১২২০০৯৯।

অ্যারোনটিক্যাল কলেজ অব বাংলাদেশ (এসিবি)
মেয়াদ : তিন বছর।
যোগ্যতা : বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক।
মোট খরচ : চার লাখ ৮৩ হাজার টাকা।
যোগাযোগ : বাড়ি-৩৮, রোড-২০, সেক্টর-১১, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা।
ফোন : ৮৯৯১২৪০, ০১১২৯৩৪০৬৩৬।

ইউনাইটেড কলেজ অব অ্যাভিয়েশন সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ইউসিএএসএম)
মেয়াদ : চার বছর।
যোগ্যতা : বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস।
মোট খরচ : পাঁচ লাখ টাকা।
যোগাযোগ : বাড়ি-১৬, রোড-৪, সেক্টর-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা।
ফোন : ৭৯১১৮৩১, ০১৭৪৯৩০৬০৯০।

কলেজ অব অ্যাভিয়েশন টেকনোলজি
মেয়াদ : চার বছর।
যোগ্যতা : বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস।
মোট খরচ : পাঁচ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
যোগাযোগ : বাড়ি-১৪, রোড-২, সেক্টর-১১, উত্তরা, ঢাকা।
ফোন : ০১৭১৭৭১৯৬৩৩, ০১৯৩৭১৮২৪৭০।