গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী ফরিদপুরের অনেক যুবক

বারি উদ্বাভিত হাইব্রিড প্রজাতির গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে ফরিদপুরের অনেক বেকার যুবক। উৎপাদন খরচ কম ও লাভ বেশী হওয়াতে অনেকই ঝুকছেন এখন গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে। ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ।

ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের বিলমামুদপুর গ্রামের বদরুজ্জামান বাচ্চু মোল্যা। এসএসসি পাশের পরে দারিদ্রতার কারনে আর পড়া হয়নি। অনেক দিন বেকার থাকার পরে টেলিভিশনের একটি রিপোর্ট দেখে উৎসাহী হন গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষাবাদের। শুরু করেন নিজের ৭ শতক জমির উপর ৮ শত চারা রোপন করে। ভাইরাস জনিত রোগে এর মধ্যে ১শত চারা মারা গেলেও ৭ শত চারায় এসেছে ফলন। মৌসুমের প্রথম ফলন সংগ্রহতেই বাচ্চু পেয়েছেন প্রায় ৭শত কেজি টমেটো। যার বাজার মূল্য প্রতি কেজিতে ১শত থেকে দেরশত টাকা। ৬ মাস পর্যন্ত এই চারা থেকে ফলন পাওয়া যাবে।


৭শতক জমিতে টমেটো আবাদে বাচ্চুর খরচ হয়েছে ২১ হাজার টাকা। এবছর তিনি দেড় থেকে ২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন। বাচ্চুর টমেটো চাষ দেখে এলাকার অনেকেই এখন গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ করছে। অনেকে টমেটো চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। টমেটো চাষ করে বেকার যুবকরা স্বপ্ন দেখেন স্বাবলম্বী হওয়ার। কৃষক বাচ্চু মোল্যা বলেন, দীর্ঘদিন বেকার জীবন যাপক করার পর টেলিভিশনের এই উন্নত জাতের গ্রীস্মকালীন টমেটোর প্রতিবেদন দেখে আমি টমেটো চাষে করার প্রস্তুত নিচ্ছি ঠিক তখন আমার পাশে এসে দাঁড়ায় ইউ এস এ আই ডির কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি আমাকে ৭শতাংশ জমিতে টমেটো চাষের জন্য ১৩হাজার ৪শত টাকা। তিনি শুধু টাকা দিয়েই সহযোগিতা করেনি, কিভাবে গাছে বেশি ফলন আসবে কিভাবে আমার খেত ভাল হবে সব ধরনের প্ররামর্শ দিয়েছেন। তবে কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কেউ কোন সহযোগিতা করেনি। আমার গাছে ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হলে বিভিন্ন সময় কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চাইছি। কিন্তু তার একটিনের জন্যও আমার ক্ষেতে আসেনি। কৃষি বিভাগ আমাকে সহযোগিতা করলে আমি আরও ভাল ফল পেতাম।

বাচ্চু মোল্যার টমেটো চাষের সাফল্য দেখে প্রতিবেশি শিক্ষিত বেকার যুবক হায়দার আলীও গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ শুরু করেছেন। কিন্তু সমস্যা একটি রয়েই গেছে। টমেটো চারা রোপনের পর গাছ গুলো ভালই হয়ে ছিল। কিন্তু কিছু গাছের পাতা কুকড়িয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। হায়দার অভিযোগ করে বলেন, কৃষি বিভাগ কিষের জন্য। তারা যদি আমাদের সহযোগিতা না করে তাহলে তাদেরকে দরকার নেই। আমি বার বার তাদের সাথে যোগা যোগ করেছি আমি আমার সমস্যার কথা জানিয়েছি। কিন্তু তারা একবারের জন্যও আমার টমেটো খেত দেখতে আসেনি। কৃষি বিভাগের লোক আমাদের সহযোগিতা করলে আমরা ভাল ভাবে চাষাবাদ করতে পারতাম। আমরা লাভবান হতাম।
কৃষিবিভাগ বলছে এটি ভাইরাস জনিত রোগ। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের মূল সমস্যা গাছের পাতা কোকড়ানো ও পচে যাওয়া।

কৃষকদের অভিযোগ এড়িয়ে গিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, হারন-অর-রশীদ বলেন, হাইব্রিড প্রজাতির গ্রীস্মকালীন টমোটে চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়। আমাদের অঞ্চলে এখন অনেকেই গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ শুরু করেছে। আমার চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি।