সোনাগাজীতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাঁস প্রজনন খামার

ইতালি থেকে আনা ভিক্টোরিয়া ইনকিউবিটরের মাধ্যমে ফোটানো হাঁসের বাচ্চা এখন ডিম দিতে শুরু করেছে।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার পৌরশহরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাঁস প্রজনন খামারে ইতালি থেকে আনা ভিক্টোরিয়া ইনকিউবিটরের মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে সাত হাজার ৮০০ ডিমের বাচ্চা ফুটানোর ধারণক্ষমতা রয়েছে। বর্তমানে খামারে ডিমের উৎপাদন কম হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে ৪০০-৪৫০টি ডিমের বাচ্চা ফুটানো হয়। এ হাঁসের ডিমের উৎপাদন বেশি হওয়ায় চট্টগ্রামসহ বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলে হাঁসের চাহিদা অনেক বেশি। খামারটি লাভজনক হওয়ায় সরকার একে প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করেছে। সোনাগাজী বাজারের পশ্চিম পাশে ১০.৫০ একর জায়গার উপর খামারটি প্রতিষ্ঠিত।

খামার সূত্রে জানা যায়, সাড়ে ১০ একর ভূমির ওপর ১৯৯৪ সালে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাঁস প্রজনন খামার প্রকল্প শুরু হয়। নির্মাণ করা হয় হাঁস পালনের জন্য ৯টি শেড, একটি দোতলা অফিস ভবন, একটি হ্যাচারি
, একটি গোডাউন, একটি অফিসার্স কোয়ার্টার ও একটি ডরমেটরি। একজন কর্মকর্তা ও ১৪ জন কর্মচারী দিয়ে ২০০২ সালে হাঁস পালন ও প্রজনন কার্যক্রম শুরু হয়। খামারটিতে বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক হাঁস রয়েছে ৪৮০টি এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক হাঁস রয়েছে এক হাজার ২১২টি। এসব বাচ্চা হাঁস চট্টগ্রামসহ বৃহত্তর 

নোয়াখালী অঞ্চলের ক্ষুদ্র খামারিদের কাছে বিক্রি করা হয়। একদিন বয়সের বাচ্চার পিস ১২ টাকা ও এক সপ্তাহ বয়সের বাচ্চার পিস ২৫ টাকা। বাচ্চা ক্রয় করে উপকূলীয় অঞ্চলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী হাঁস পালনের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করে চলেছেন। এ হাঁস অন্য হাঁসের তুলনায় সম্পূর্ণ আলাদা। দৈহিক গঠন ও গোশত অন্য হাঁসের চেয়ে অনেক বেশি। বছরে ১২ মাসের মধ্যে ১০ মাস ডিম দেয়। বেশি ডিম দেয়ার জন্য এ হাঁসের প্রতি সবার আগ্রহ বেশি।

সোনাগাজীর সুজাপুর গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি ফাতেমা বেগম জানান, আমি বাচ্চা ক্রয় করে এক-দুই মাস লালনপালন করে প্রতি জোড়া ৩০০-৩৫০ টাকা বিক্রি করি। তাতে আমার ভালো লাভ হয়। নোয়াখালীর ক্ষুদ্র খামারি আবু তালেব জানান, ডিম উৎপাদনের জন্য আমি এ হাঁস ক্রয় করি। অন্য হাঁসের তুলনায় এ হাঁস অনেক বেশি ডিম দেয়। প্রতিদিন ডিম বিক্রি করে সংসারের ব্যয় মেটাতে পারি।


এ ব্যাপারে হাঁস প্রজনন খামারের ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান জানান, আমরা প্রজননের মাধ্যমে হাঁসের উন্নত জাত উৎপাদন করি। অন্য হাঁসের তুলনায় এ হাঁস ডিম বেশি পাড়ে এবং গোশতও বেশি হয়। তাই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এ হাঁস নেয়ার জন্য ভিড় জমায়।

সুত্র: নয়াদিগন্ত।