বিভিন্ন ভ্যারাইটির মলি মাছ বিদেশী বাহারি মাছ হিসেবে মলি বাংলাদেশে এক অতি
পরিচিত নাম। মধ্য আমেরিকার (মূলত মেক্সিকো, কলম্বিয়া ও ভেনিজুয়েলা) এই মাছ আমাদের দেশে ভারত ও থাইল্যান্ড থেকে আনা হয়।
আমাদের দেশে চার ভ্যারাইটির মলি দেখতে পাওয়া যায়। যথা- কালো বর্ণের Black molly, সাদা বর্ণের transparent molly, সাদা-কালো ফুটকি যুক্ত
Mixed colour molly এবং সাদা ও কমলা বর্ণের
Balloon molly। এক বর্ণের চেয়ে উভয় বর্ণের
ফুটকি যুক্ত মাছগুলো অনেক বেশী বৈচিত্র্যময়। বর্ণ ছাড়াও পৃষ্ঠ ও পুচ্ছ পাখনার বিভিন্ন
আকৃতির মাধ্যমেও মলিতে নানারকম বৈচিত্র্য দেখতে পাওয়া যায়। শ্রেণীবিন্যাসে মলি মাছে
অবস্থান (Taxonomic Position)
Kingdom: Animalia Phylum: Chordata Class:
Actinopterygii Order: Cyprinodontiformes Family: Poeciliidae Genus:
Poecilia Species: Poecilia sphenops
Common name: Molly Local name : মলি ঘরের একুয়ারিয়ামে খুব সহজেই এর লালন-পালন ও
প্রজনন করা যায়। এদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ নিষেক (Internal fertilization) দেখতে পাওয়া যায়। এদের পুরুষেরা সর্বোচ্চ ১০ সেমি এবং স্ত্রীরা সর্বোচ্চ ১১ সেমি
হয়ে থাকে তবে বেশির ভাগ মাছ সাধারণত ১-৩ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এরা সর্বোচ্চ ৩-৫ বছর পর্যন্ত
বাঁচতে পারে তবে বেশিরভাগ মাছ দেড় থেকে তিন বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এদের অনুকূল পি.এইচ.
৭.৫-৮.৫, অনুকূল তাপমাত্রা ১৮-২৮
ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড (৬৪-৮২ ডিগ্রী ফারেনহাইট)।
প্রজননের বয়স, সময় ও তাপমাত্রা: জন্মের ৩ মাসের
মধ্যে এরা প্রাপ্ত বয়স্ক তথা প্রজননের জন্য উপযুক্ত হয়। প্রাপ্ত বয়স্ক মলি মাছ অনুকূল
তাপমাত্রা ও পরিবেশে যে কোন ঋতুতেই বাচ্চা প্রসব করে থাকে। এদের বৃদ্ধির জন্য ৭০-৮০
ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা খুব ভালো। প্রজননের উপযুক্ত হওয়ার বিষয়টি সময়ের পাশাপাশি
এর বসবাসের পরিবেশের উপরে নির্ভর করে। যথাযথ পরিচর্যা ও খাবার এদের প্রজননের হারকে
তরান্বিত করে। পুরুষ মলি মাছ: এনাল ফিন পরিবর্তিত
হয়ে গোনোপোডিয়ামে পরিণত হয়েছে স্ত্রী মলি
মাছ: স্বাভাবিক এনাল ফিন বর্তমান স্ত্রী
ও পুরুষ মাছ শনাক্তকরণ: খুব ছোট অবস্থাতেই (১ সপ্তাহ বয়সের) মলির স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে
আলাদা করা যায়। প্রকৃত পক্ষে স্ত্রী ও পুরুষ মাছের রঙের কোন পার্থক্য থাকে না। পার্থক্যটা
পাওয়া যায় শারীরিক গঠনে। পুরুষ মাছের দেহ স্ত্রী মাছের তুলনায় অনেক চাপা ও পাতলা
হয়। অভ্যন্তরীণ ফারটিলাইজেশন হওয়ায় এনাল
ফিনেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। পুরুষ মাছের এনাল ফিন পরিবর্তিত হয়ে জেনিটাল অর্গানে
পরিণত হয় যা গোনোপোডিয়াম নামে পরিচিত অপর দিকে স্ত্রী মাছের এনাল ফিন অন্যান্য মাছের
মতই স্বাভাবিক থাকে। একটি পরিণত স্ত্রী মাছ
সাধারণত তিন ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে এবং একই বয়সের পুরুষ মাছ তুলনামূলক ভাবে আকৃতিতে
ছোট হয়। প্রজননের জন্য একুয়ারিয়াম প্রস্তুতি:
একটি ১৫ ইঞ্চি প্রস্থ, ১৫ ইঞ্চি উচ্চতা ও ২৪ ইঞ্চি
দৈর্ঘ্যের একুয়ারিয়ামে বা এর থেকে ছোট একুয়ারিয়ামে সহজেই প্রজনন করে থাকে। একুয়ারিয়ামের
পানি ক্ষারীয় (পি.এইচ. ৭.৫ সবচেয়ে উপযুক্ত) হলেই ভাল। একুয়ারিয়াম প্রস্তুতির সময়
ফিল্টার দিতে হবে।সম্পূর্ণ একুয়ারিয়ামে পাথর
না দেয়াই ভাল কারণ সাদা কালো মলি মাছ আর সাদা
কালো রঙের পাথরের জন্য পোনা মাছ নাও দেখা যেতে
পারে। মলি মাছের পুরুষ বা স্ত্রী কারোরই পেরেন্টাল কেয়ার দেখতে পাওয়া যায় না। বরং
বাচ্চা হবার পরপরই স্ত্রী ও পুরুষ মাছ বাচ্চা খেয়ে ফেলে। প্রকৃত পক্ষে এদের ফার্টিলাইজেশনে ব্রিডার তথা ব্রিড
তত্ত্বাবধায়ককে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে হয় না তবে মাছের পোনাকে যত দ্রুত সম্ভব ব্রুড
মাছের থেকে আলাদা করে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হয়। অনেকেই মা-বাবা মাছ থেকে পোনাকে বাঁচানোর বিভিন্ন
পদ্ধতির কথা বলে থাকেন। যেমন- অনেকের মতে নিচে মার্বেল দিলে মার্বেলের ফাঁকে মাছের
পোনা আশ্রয় পেতে পারে কিন্তু এখানে অসুবিধা হল মলির পোনা খুবই চঞ্চল প্রকৃতির এবং
জন্মের পর থেকেই এরা দ্রুত সাঁতরাতে পারে ফলে এক জায়গায় স্থির না থাকার কারণে সহজেই
বড় মাছ এদের উপস্থিতি টের পায় এবং খেয়ে ফেলে। অনেকে বলেন ভাঙ্গা মাটির হাড়ি-পাতিলের
টুকরা, গাছ বা এর ডাল-পালা দিলেও
পোনা বাঁচানো সম্ভব কিন্তু এখানেও উপরে উল্লেখিত
সমস্যা বিদ্যমান। আবার অনেকের মতে প্লাস্টিকের রশি এক হাত লম্বা করে কেটে প্রত্যেকটা
প্যাঁচ খুলে দলা পাকিয়ে রাখলেও সেখানে পোনা মাছ আশ্রয় নিতে পারে কিন্তু এ ক্ষেত্রে বড় মাছ পোনাকে তাড়া করে রশির জটলা তে ঢুকে পড়ে
এবং শেষ পর্যন্ত মাছের গিলে রশি আটকে মাছের
মৃত্যু হয়। এভাবে মৃত্যুর হার অনেক বেশী বলে এ পদ্ধতিটিও খুব একটা কাজের নয়। পোনা মাছকে একটি সহজ পদ্ধতিতে বড় মাছ থেকে আলাদা
করা যায়। এজন্য প্রয়োজন কেবলমাত্র একটি ব্রিডিং নেট। প্রজনন একুয়ারিয়ামে স্থাপিত একটি ব্রিডিং নেট
ব্রিডিং নেট তৈরি: ব্রিডিং নেট তৈরির জন্য প্রয়োজন চিকন করে কাটা বাঁশ, আর ০.২ ইঞ্চি মেস সাইজের জাল। প্রথমে একটি ফ্রেম তৈরি করে তার চার পাশে ছবির মত
করে জাল সেলাই করে দিতে হবে। উপরে বর্ণিত সাইজের একুয়ারিয়ামের জন্য ১৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ১২ ইঞ্চি প্রস্থের ফ্রেম তৈরি করতে হবে আর জালের দৈর্ঘ্য
হবে ১২ ইঞ্চি। এ জালটিকে একুয়ারিয়ামের প্রস্থ
বরাবর ফ্রেমের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী স্থাপন করতে হবে। ফ্রেমের ২ অংশ একুয়ারিয়ামের কাঁচের
সাথে লেগে থাকবে (চিত্র অনুযায়ী)। ব্রিডিং
নেট স্থাপন: নেট অবশ্যই একুয়ারিয়ামের মাঝামাঝি স্থাপন করতে হবে। এর ফলে পোনা নেটের
দু’পাশে যথেষ্ট যায়গা পাবে।
জালটির পাঁচ ভাগের চার ভাগ পানিতে ডুবানো অবস্থায় রাখতে হবে। এভাবে তৈরি ও স্থাপিত ব্রিডিং জালে সহজেই মাছ বাচ্চা
প্রসব করতে পারে এবং বাচ্চাকে রক্ষাও করা যায় সহজে। প্রজনন: প্রজননের আগে স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে ইচ্ছা
করলে আলাদা একুয়ারিয়ামে রেখে পরিচর্যা করা যায় কিন্তু এক সাথে রাখলেও খুব একটা সমস্যা
দেখা যায় না। মাছ যদি বিক্রির উদ্দেশ্যে রাখা হয় তবে স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে একসাথে
রাখাটা সুবিধাজনক নয় কারণ এ মাছের প্রজনন
হার খুব বেশী। এক সাথে থাকার জন্য মাছ
বারবার প্রজননে অংশ নেয় এবং মাছের বৃদ্ধি রোহিত হয়। পুরুষ ও স্ত্রী মাছ এক সাথে থাকলে প্রেগন্যান্ট
স্ত্রী মাছকে সনাক্ত করে ব্রিডিং নেটে দিতে
হবে। কিন্তু আলাদা রাখা মাছকে ১টি পুরুষ মাছের
বিপরীতে ২টি স্ত্রী মাছ এই অনুপাতে ২ -৩ দিনের জন্য ব্রিডিং একুয়ারিয়ামে রাখতে হবে।
অতঃপর স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে আলাদা একুয়ারিয়ামে পরিচর্যা করতে হবে। ফারটিলাইজেশনের
পর ২৪-৪৮ দিনের মধ্যে স্ত্রী মাছ বাচ্চা প্রসবের
জন্য উপযুক্ত হবে। বাচ্চা প্রসবের সময় হলে মাছকে ব্রিডিং নেটে স্থাপন করতে হবে। এ
সময় পরিচর্যা একুয়ারিয়াম থেকে ব্রিডিং নেট
স্থাপনকৃত একুয়ারিয়ামের পানির তাপমাত্রা
একই রকম হতে হবে। উপরে উল্লেখিত আকৃতির নেটে ৮ থেকে ১২টি মাছ রাখা যাবে। মা মলি মাছগুলো ব্রিডিং নেট থেকে সরিয়ে নেয়া
হচ্ছে প্রেগন্যান্ট মাছ শনাক্তকরণ ও ব্রিডিং
নেটে স্থানান্তর: প্রেগন্যান্ট মাছের পেট সাধারণ মাছের তুলনায় অনেক ফোলা হয়। এনাল
ফিনের কাছে কালো স্পট দেখা যায় যা কালো মলিতে সহজে বোঝা না গেলেও অন্য রঙের মলিতে
সহজেই সনাক্ত করা যায়। এক সাথে থাকা স্ত্রী
ও পুরুষ মাছের মধ্যে পুরুষ মাছকে স্ত্রী মাছের পেছনে (জেনিটাল ওপেনিং এর কাছে) আঘাত
করতে দেখা যাবে। মাছ সাধারণত সাঁতরাতে সাঁতরাতে বাচ্চা প্রসব করে এবং একুয়ারিয়ামে
থাকা অন্যান্য মাছ সেই বাচ্চা খাওয়ার জন্য তার পেছন পেছন তাড়া করে। এ থেকে সহজেই প্রেগন্যান্ট স্ত্রী মাছকে আলাদা করা
যায়। ১ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ০.৩-০.৪ ইঞ্চি প্রস্থের মাছকে উপরে উল্লেখিত মাপের নেটে
দেয়া যাবে। এর থেকে ছোট মাছ হলে জাল দিয়ে বের হবার চেষ্টা করবে এবং গিলে জাল আটকে
মারা যাবে। আকৃতিতে ছোট মাছকে জালে দেবার দরকার নেই কারণ এ মাছ গুলোর
মুখের ছিদ্র ছোট থাকে বলে তারা প্রসবকৃত মাছ খেতে পারে না । ফলে মা মাছ ও পোনা মাছ
একই সাথে অবস্থান করে। পোনা প্রসব: একটি
মা মাছ এক দফায় ১৫-১৫০টি পোনা প্রসব করে থাকে। পোনার সংখ্যা নির্ভর করে মা মাছের বয়স
ও পরিচর্যার উপর। প্রথম বারের মত পোনা প্রসব করতে সক্ষম নতুন মা মাছ আকৃতিতে ছোট হয়ে
থাকে এবং এক দফায় ১৫-২০ পোনা প্রসব করে। মাছের বয়স ও দেহের আকৃতি বৃদ্ধি পাবার সাথে
সাথে পোনার সংখ্যা ও আকৃতির পরিমাণ বাড়ে।
কম ও বেশী বয়সের মা মাছ তুলনামূলক ভাবে কম পোনা প্রসব করে কিন্তু মাঝ বয়সী
মা মাছের পোনা প্রদানের হার অনেক বেশী হয়। খাবার ও পরিচর্যা ঠিক মত না হলে এ সংখ্যার
তারতম্য ঘটে। পোনা সংগ্রহ: পোনা সংগ্রহের
জন্য একুয়ারিয়ামে মাছ ধরার হাত জালে কাপড় লাগিয়ে নিতে হবে। অথবা লোহার মোটা তারের একটি ফ্রেম তৈরি করে তাতে
কাপড় লাগিয়ে নিতে হবে। পোনা খুব ছোট সেই
কারণে এ ব্যবস্থাটা নিতে হবে কারণ বাজারে একুয়ারিয়ামের মাছ ধরার জন্য যে হাত জাল পাওয়া যায় তার ফাঁক দিয়েও পোনা বের হয়ে
যায়। যেহেতু পোনা ছুটাছুটি করে এবং একুয়ারিয়েমে
আগে থেকেই মাছ ও ব্রিডিং নেট বিদ্যমান সে কারণে পোনা তোলার সুবিধার্থে মাছ সহ ব্রিডিং
নেটটাকে অন্য কোন একুয়ারিয়াম বা পানি সহ বালতিতে সরিয়ে ফেলতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে সরিয়ে রাখা মাছ গুলো নতুন
পাত্রেও পানিতে ডুবে থাকে এবং দুই পাত্রের পানির তাপমাত্রা একই রকম হয়। সরানোর সময়
জালের নিচে হাত দিন(চিত্রের মত) বা কোন প্রস্থ থালা বা ট্রে দিন এতে করে মাছ ব্রিডিং
নেট সহ পানি থেকে তুলবার সময় একে অন্যের উপড়ে পড়ে চাপ সৃষ্টি করবে না। নয়তো এমনি টান দিয়ে জাল তুললে মাছ একটির উপড়ে
একটি পড়ে চাপের সৃষ্টি হবে। এবার পোনাগুলোকে
তাড়া করে কাপড়ের জালে ঢুকাতে হবে। জাল পানিতে থাকা অবস্থাতেই ছোট বাটি দিয়ে জাল
থেকে পানি সহ পোনাগুলো তুলে পোনার একুয়ারিয়ামে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রেও পানির তাপমাত্রা একই রকম হতে হবে। সব
পোনা সরান হয়ে গেলে পুনরায় ব্রিডিং নেট সহ মাছ গুলোকে একুয়ারিয়ামে রাখতে হবে। এভাবে
মাছের বাচ্চা দেয়া শেষ হয়ে গেলে পুনরায় মাছকে পরিচর্যা একুয়ারিয়ামে রাখতে হবে।
বাচ্চা দেয়া শেষ হয়েছে এটা বোঝা যাবে মাছের পেট দেখে। এ সময় মাছের পেটের আকৃতি পূর্বের
অবস্থায় ফিরে যাবে। পোনা মাছ ও ব্রুড মাছের
খাবার: পোনা ও মা মাছ বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকে। প্রকৃতিতে এরা ছোট প্রাণী ও
উদ্ভিদ কণা খেয়ে থাকে। তবে পোনাদের কেবল ফুটানো আর্টিমিয়া খাবার হিসেবে দেয়া যায়।
একুয়ারিয়ামের মাছের জন্য প্রস্তুত ভাসমান খাবার এবং শুকনা ও তাজা টিউবিফেক্সও খেয়ে
থাকে। জীবন্ত টিউবিফেক্স কুচি করে কেটে দিতে হবে। পোনা মাছ কে জন্মের পরপরই খাবার দিতে
হবে। ব্রুড মাছ এবং পোনা মাছ এ দু ধরনের মাছকেই দিনে দুবার করে খাবার দিতে হবে। যেহেতু
মাছ অনেক সময় নিয়ে বাচ্চা প্রসব করে তাই ব্রিডিং নেটে থাকা মা মাছকে খাবার দেয়ার
সময় কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার দেয়া যাবে না। যেহেতু
মাছ জাল থেকে বের হতে পারবে না সে কারণে একুয়ারিয়ামের
মেঝেতে জমে থাকা খবারও মাছ খেতে পারবে না সেহেতু মাছ কে এমন ভাবে খাবার দিতে হবে যাতে মাছ
সহজেই তা খেয়ে ফেলে। ব্রিডিং নেটের উপরের অংশে (পানির লেভেলে) কাপড় লাগিয়ে নিতে
হবে যাতে ভাসমান খাবার ভাসতে ভাসতে জালের বাইরে না চলে যায়।এ কাজটি না করলে মাছকে দাঁড়িয়ে থেকে খাবার খাওয়াতে হবে
আর খাবার ভেসে বাইরে চলে গেলে তা হাত দিয়ে বা কোন কিছু দিয়ে বাইরে থেকে ভিতরে দিতে হবে।
একুয়ারিয়াম পরিচর্যা: একুয়ারিয়ামের নিচে খাবার জমে থাকলে তা সাইফোনিং এর
মাধ্যমে সরিয়ে ফেলতে হবে।এর ফলে জমে থাকা খাবারে ছত্রাক আক্রমণ করবে না এবং মাছও বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা পাবে। সপ্তাহে এক তৃতীয়াংশ
পানি পরিবর্তন করে দিতে হবে। সম্পূর্ণ পানি পরিবর্তন করলে বা একুয়ারিয়াম পরিষ্কার
করলে নতুন পানি দেবার সাথে সাথে মাছকে একুয়ারিয়ামে দেয়া যাবে না। পানিটাকে স্থির হবা জন্য সময় দিতে হবে নয়তো অক্সিজেনের
অভাবে মাছ মারা যাবে। কোন মাছ মারা গেলে সাথে সাথে তা সরিয়ে ফেলতে হবে নয়তো পানি
দূষিত হবে। নতুন পানি দিলে পানিতে এক ফোটা মিথাইলিন ব্লু ব্যবহার করতে হবে। একুয়ারিয়ামকে
অতিরিক্ত তাপ ও আলো থেকে দূরে রাখতে হবে। মলি
লবণাক্ত পানির মাছ এ কারণে উপড়ে উল্লেখিত
মাপের একুয়ারিয়ামে এক মুঠো সামুদ্রিক লবণ
প্রতি এক মাসে কিংবা সম্পূর্ণ পানি পরিবর্তন করার পর দিতে হবে। বাজারে কিনতে
পাওয়া পিউরিফাইড তথা প্যাকেট লবণ না দিয়ে খোলা লবণ দিতে হবে। এক্ষেত্রে লবণে ময়লা
পাওয়া যায় তাই লবণ পানিতে গুলিয়ে কাপড়ে ছেঁকে নিতে হবে। যা অবশই করতে হবে: মাছকে প্রজননের আগে ও পরে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার
দিতে হবে। ছেড়া নেট ব্যাবহার করা যাবে না। এতে করে মাছ ছেড়া অংশ দিয়ে বের হবার চেষ্টা
করবে এবং গিলে নেট আটকে মারা যাবে। পোনা দেবার পর বের হয়ে পোনা খেয়ে ফেলবে। অতিরিক্ত
ছোট মাছকে ব্রিডিং নেটে দেয়া যাবে না। নেটে আলকাতরা বা যে কোন রং করতে হবে এতে জাল
পানি থেকে রক্ষা পাবে। তবে নেটের রং ভাল ভাবে রোদে শুকাতে হবে। পোনা মাছ সতর্কতার সাথে
তুলতে হবে। পোনা দেয়া শেষ হয়েছে এটা নিশ্চিত হবার সাথে সাথে মাছকে সরিয়ে ফেলতে হবে
Home »
অ্যাকুরিয়াম মাছ
» একুয়ারিয়ামে মলি মাছের প্রজনন আয়েশা আবেদীন আফরা
0 comments:
মন্তব্য করুন