নওগাঁয়
স্ট্রবিরি চাষ করে সফলতা
অর্জন করেছেন এক শিক্ষিত
বেকার যুবক সালাউদ্দিন উজ্জল। তাই
সরকারি বা বেসরকারি চাকরির
প্রত্যাশা করেন না তিনি। স্ট্রবেরি
আর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ান আঙ্গুর
চাষ করে তিনি জীবনের
স্বপ্নপূরন করতে চান।
সালাউদ্দিন উজ্জল (৩৫) নওগাঁ
শহরের কোমাইগাড়ী মহল্লার সৈয়দ আলীর পুত্র। বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে সর্বচ্চো ডিগ্রী লাভ করার
পর চাকরির প্রত্যাশায় ঘুরে
ঘুরে কুলকিনারা না পেয়ে অবশেষে
স্বাবলম্বিতা অর্জনের লক্ষ্যে বিভিন্ন জায়গায় কাজ খুঁজে
ফিরতে থাকেন। এক
পর্যায়ে তিনি কৃষি উৎপাদনের
মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে
স্বাবলম্বিতা অর্জনের পথ খুঁজে নেন।
চট করেই অন্যদের থেকে
আলাদা করা যায় খেতটি। মাঠজুড়ে
সারি সারি বেড।
বাগানের সারি সারি বেডের
ওপর শোভা পাচ্ছে লাল
টসটসে চোখ জুড়ানো স্ট্রবেরি। মাঠের
মাঝখানে বসে ফল তুলছেন
এক চাষি। ফল
তোলার আনন্দ তাঁর চোখেমুখে। শহরের
জেলখানার পশ্চিম পার্শ্বে এলাকায়
এই দৃশ্য চোখে পড়ে। স্ট্রবিরি
চাষ করে সফলতা অর্জন
করেছেন উজ্জল। অথচ
তিনি আগে কখনো চাষবাস
করেননি। ছিলেন
শিক্ষিত বেকার যুবক।
প্রথমে যখন চাষ শুরু
করেন অনেকে নিরুৎসাহিত করেছেন। লোকসানের
ভয় দেখিয়েছেন। তার
পরও দমে যাননি।
এগিয়েই গেছেন।
উজ্জল
জানান, একদিন টেলিভিশনে কৃষিবিষয়ক
অনুষ্ঠানে স্ট্রবেরি চাষের ওপর অনুষ্ঠান
দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন
এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
পরিকল্পনামতে
তিনি শহরের জেলখানার পশ্চিম
পার্শ্বে ৩ বিঘা জমি
লিজ নেন। বার্ষিক
প্রতি বিঘা জমি ১০
হাজার টাকা করে মোট
৩০ হাজার টাকা প্রদানে
চুক্তিবদ্ধ হন। সে
জমিতে গত ২ বছর
ধরে স্ট্রবেরি ও আঙ্গুর চাষ
শুরু করছেন। গত
বছরের সফলতা সফলতা প্রাপ্তির
ফলে এ বছরও তিনি
ওই ৩ বিঘা জমিতে
স্ট্রবেরি চাষ করেছেন।
অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে
চারা রোপণ করেন।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে স্ট্রবেরি উঠতে
শুরু করে। এপ্রিলের
মাঝামাঝি পর্যন্ত উৎপাদন হবে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় তার বাগান
থেকে স্ট্রবেরি সরবরাহ করা হচ্ছে।
আবার
সরাসরি ফসলের ক্ষেত থেকেও
পাইকারি কিনা নিয়ে যাচ্ছেন
ব্যবসায়ী
রা। তার
এই ক্ষেতের স্ট্রবেরির চাহিদা রয়েছে, একথা
জানা উজ্জল। তিনি
আশা করছেন এ বছর
প্রতি বিঘা জমি থেকে
৩ হাজার ২শ কেজি
স্ট্রবেরি উৎপাদন হবে।
সেই হিসেবে ৩ বিঘায়
উৎপাদিত হবে ৯ হাজার
৬শ কেজি। বর্তমান
বাজার মূল্য অনুযায়ী তিনি
পাইকারি বিক্রি করছেন প্রতি
কেজি স্ট্রবেরি ২শ টাকা হারে। এ
হিসেবে উৎপাদিত স্ট্রবেরির বিক্রি মূল্য ১৯
লাখ ২০ হাজার টাকা।জমি লিজ, চারা, সার, ফসফেট, কীটনাশক, লেবার খরচ বাবদ বাদ দিয়ে কেবলমাত্র স্ট্রবেরি উৎপাদন করে এ বছর তার নিট মুনাফার পরিমাণ কমপক্ষে ১৬ লাখ টাকা। এ ছাড়াও আঙ্গুরের মৌসুম থেকেও তিনি আয় করবেন উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ। স্ট্রবেরি চাষ করে কেবল তিনি নিজেই লাভবান হয়েছেন তাই নয়। অন্যদেরও স্ট্রবেরি চাষে প্রত্যক্ষ সহযোগীতা দিয়ে উৎপাদিত করছেন। তার প্রত্যক্ষ সহযোগীতা ও পরামর্শে গাজীপুর, গাইবান্ধা, খুলনা, নাটোর, বগুড়া ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২২টি স্ট্রবেরি বাগান তৈরি করে দিয়েছেন। উজ্জল জানান, আমার সুদিন শুরু হয়েছে। আগামী বছর চাষ আরও বাড়াব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এসএম
নুরুজ্জামান মন্ডল উজ্জলের স্ট্রবেরি
ক্ষেত সম্পর্কে অবহিত রয়েছেন।
তিনি জানান, কয়েক বছর
ধরে নওগাঁ জেলায় বিভিন্ন
এলাকায় স্ট্রবেরি চাষ শুরু হয়েছে
এবং যারা চাষ করেছেন
তারা লাভবান হচ্ছেন।
বর্তমানে স্ট্রবেরি চাষ খুবই লাভজনক
বলেও তিনি জানান।
0 comments:
মন্তব্য করুন