পাতাকপি-ফুলকপি এখন আর
শুধু শীতের সবজি নয়। সারা
বছরই বাজারে মেলে এই
কপি। মৌসুম
না হলে দাম একটু
বেশি হাঁকায় বিক্রেতারা।
তবে দাম যা হোক
ক্রেতারা অসময়ে শীতের সবজি
পেয়ে খুশি মনেই কেনে। অবশ্য
আগাম এ কপির স্বাদ
ও গন্ধ অনেকটাই আলাদা। এর
পরও চাহিদা থাকায় কৃষকরাও
ঝুঁকেছে শীতের আগাম কপির
চাষে।
কয়েক বছর ধরে মেহেরপুরে
বেড়েছে অসময়ে কপির চাষ। কৃষকরা
মনে করে শীতকালে কৃষকদের
কপিচাষে ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই
যায়। আগাম
কপিচাষ করতে পারলে এবং
কপি ভালো হলে লোকসানের
ভয় থাকে না।
কৃষকরাও বলছে তাদের বাস্তব
অভিজ্ঞতা দিয়ে আগাম কপির
চাষ করতে পারলে লোকসান
হওয়ার আশঙ্কা একেবারেই কম।
মেহেরপুরের
গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের ফুলকপির চাষি আকবর আলী
জানান, শীতকালের ফুলকপি বৃষ্টি সহ্য
করতে পারে না।
তাতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
হয়। কিন্তু
আগাম চাষ করা ফুলক
পি
এ ধরনের নয়।
সাধারণত একটু উঁচু জমিতেই
ফুলকপির চাষ করা হয়। চারার
গোড়ায় পানি দাঁড়িয়ে না
গেলে কপির ক্ষতির আশঙ্কা
থাকে না। সে
কারণেই তিনি কপির চাষ
করে আসছেন চার বছর
ধরে। প্রতিবিঘা
কপির চাষ করতে সর্বোচ্চ
২৫ হাজার টাকা খরচ
হয়। এক
বিঘা জমিতে ছয় হাজার
কপি চাষ করা যায়। প্রতিটি
কপি ১০ টাকা করে
বিক্রি করলেও ৬০ হাজার
টাকা পাওয়া যায়।
প্রতিবিঘা কপিতে লাভ দাঁড়ায়
৩৫ হাজার টাকা।
দাম আরো একটু বেশি
হলে লাভ অনেক বেড়ে
যায়। কপির
চাষ করে মাত্র ৯০
দিনের মধ্যে তা বাজারজাত
করা যায়।
একই গ্রামের কপিচাষি রমজান আলী জানান,
শীতে কপির চাষ করে
তিন বছর ধরে শুধু
লোকসান গুনতে হয়েছে।
দুই বছর ধরে আগাম
পাতাকপি চাষ করে তিনি
লাভবান হচ্ছেন। মেহেরপুর
সদর উপজেলার কপিচাষি ডাবলু হোসেন জানান,
গতানুগতিক ফুলকপি ও পাতাকপি
চাষে অনেক লোকসান হয়। কিন্তু
গ্রীষ্মকালীন কপির চাষ করে
ক্ষতি তেমন নেই।
লাভের পাল্লা ভারী থাকে
সব সময়। তিনি
এক যুগ ধরে টেংগার
মাঠ গ্রামে ৫০ বিঘা
করে পাতাকপি ও ফুলকপি চাষ
করেন। গত
বছর ভালো লাভ হয়। এবারও
তিনি উৎপাদন খরচ তুলে
ফেলেছেন। এখন
২০ বিঘা কপি আছে। যার
সবই লাভ। তবে
আগাম কপিচাষ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। লাগাতার
বৃষ্টি লেগে থাকলে কপি
বাঁচিয়ে রাখা যায় না।
মেহেরপুর
জেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তরের
উপপরিচালক চৈতন্য কুমার দাস
জানান, এবার শীতের আগাম
কপিচাষ হয়েছে দুই হাজার
২০০ হেক্টর জমিতে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় এবার
কপিচাষিরা লাভের মুখ দেখছে।
0 comments:
মন্তব্য করুন