পেশা হিসেবে কোয়েল পালন


এএসএম ইউনুছ : বাংলাদেশে পেশাগত বিষয়ে নতুন নতুন অনেকগুলো পেশা বের হয়েছে তাদের মধ্যে কোয়েল পালন একটি নান্দনিক পেশা। এ পেশায় ঝুঁকি যেমন রয়েছে কম তেমনি লাভও রয়েছে বেশি। তবে দেশে চাহিদার চেয়ে কোয়েল পালনে ব্যবসায়ীর সংখ্যা কম। আবার এ ব্যবসায় যারা জড়িত রয়েছে তারা অধিকাংশই শখের বসত কোয়েল পালন করে থাকে। তবে বর্তমান অনেক স্বপ্ন পুঁজির ব্যবসায়ী কোয়েল পালন পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তার সংখ্যা অপ্রতুল: দেশে যে হারে কোয়েল চাহিদা বেড়েছে সে হারে ব্যবসায়ীর সংখ্যা বাড়েনি। দেশের স্বল্প শিক্ষিত বেকার তরুণরা কোয়েল পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিলে নিজে যেমন স্বাবলম্বি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তেমনি আত্মসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। কোয়েল পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে কি প্রয়োজন তার বিরুপ দেয়া হলোÑ

শুরু করবেন কিভাবে

প্রথমত যারা ঢাকা শহর সংলগ্ন অবস্থান করছেন। তারা কোয়েল পালন ব্যবসা করতে চাইলে তারা ঢাকার সাভারের কোয়েল খামার হতে ১৮/৩০ দিনের বাচ্চা সংগ্রহ করবেন। অথবা ঢাকার মিরপুর হতেও সংগ্রহ করতে পারেন। পরবর্তীতে বাচ্চাগুলোর পরিমাণ মাফিক কাঠের কিংবা লোহার খাচা তৈরি করবেন কোয়েলের বাচ্চাগুলোকে রাখবেন। 
কত টাকা প্রয়োজন : গুলিস্তান সংলগ্ন মায়ের দোয়া পাখি হাউসের মালিক কামাল উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, এক ক্ষুদ্র আয়ের ব্যবসায়ী ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে মাসে ৮/১০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। কাপ্তান বাজার কিশোরগঞ্জ বার্ড হাউজের মালিক রেজাউল করিম জানান, সাধারণত ১৮ দিনের কোয়েলের বাচ্চা একশত দাম তিন হাজার টাকা ২০ দিনের বাচ্চার দাম একশত ৩০ হাজার পাচশত টাকা, ২৫ দিনের বাচ্চা একশত দাম চার হাজার টাকা সর্বপরী একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার বিনিয়োগ করলে কোয়েল পালনের ব্যবসা করা সম্ভব। 

কত টাকা আয় হবে : 

একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাসে ৩০/৪০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে মাসে ৮/১০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। কেননা ১৮ দিনের ১০০ কোয়েলের বাচ্চা তিন হাজার ক্রয় করে এক মাস পালন করে সেই একশত বাচ্চা পাঁচ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব এইভাবে ছয়শত বাচ্চা ১৮ হাজার টাকায় ক্রয় করে একমাস পর ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব। অন্যদিকে একটি কোয়েল সাধারণত বছরে ২০০/৩০০ ডিম পাড়ে। সাধারণ তা কোয়েলের বয়স ২ মাস পর হতে ডিম পাড়া শুরু করে। কোয়েলের ডিম অন্যান্য পশুদের মতো প্রাকৃতিকভাবে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটায় না। মূলত মেশিনের সাহায্যে কোয়েলের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে থাকে। বাংলাদেশে সাধারণ দুই ধরনের কোয়েল পাওয়া যায়, যথা সাদা এবং কালো। তবে কোয়েলের চাহিদা বেশি। কাপ্তান বাজার সাইট মার্কেটের মা বাবার দোয়া বার্ডম সেল, প্রোপ্রাইটর আব্দুল কাদের মৃধা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আমাদের দেশে কোয়েলের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বিশেষ করে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা কোয়েল পালনের প্রতি বেশি পরিমাণে আগ্রহ দেখা যায়। তবে শখের বশত যে সব তরুণ-তরুণীরা কোয়েল পালনে আগ্রহী তাদেরকে যদি সরকারি পৃষ্ঠপোশকতায় কোয়েল পালনে আগ্রহী করে তোলা যায়, তাতে পালনে মানুষের আগ্রহ বারবে। কোয়েল পালনের আগ্রহী ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে কাপ্তান বাজার ‘কিশোরগঞ্জ বার্ডস’ সেন্টারের প্রোপ্রাইটর আবদুল খালেক জানান, যারা কোয়েল পালনে আগ্রহী তাদের সব সময় খেয়াল রাখতে হবে কোয়েলসমূহ যেন ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোন কোয়েল ভাইরাসে আক্রান্ত হয়, রেনামাইসিন এবং কসমিস প্লাম এবং স্যালাইন খাওয়াবেন। অন্যথায় পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করবেন। আমাদের দেশে পুরুষ প্রজাতির কোয়েলকে নর আর মহিলা প্রজাতির কোয়েলকে মাদী নামে পেয়ে থাকে।