বিদ্যুৎবিহীন হিমাগার তৈরী।


জেলার কাহারোল উপজেলা প্রকৌশলী দিলীপ কুমার সরকার আলু-সবজিসহ কৃষিপণ্য ও বিভিন্ন কাঁচামাল কম খরচে ও বিদ্যুিবহীন প্রায় ৬ মাস প্রাকৃতিক উপায়ে সতেজ রাখতে নতুন ধরনের এক হিমাগার নির্মাণ করেছেন। প্রাকৃতিকভাবে সবজি সংরক্ষণাগার তৈরির প্রযুক্তি বাংলাদেশ তথা এশিয়ার কোথাও এখনো ব্যবহূত হয়নি। জানা গেছে, কোটালিস্ট ও জিমার্ক সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় এই হিমাগারটি নির্মাণ করেছেন দিলীপ কুমার। এই হিমাগারটি নির্মাণে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এতে বাঁশ, খড় ও মাটি ব্যবহার করা হয়েছে এবং পর্যাপ্ত বাতাস যাতায়াতের জন্য ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি ৩০ ফুট প্রস্থ, ৬০ ফুট দীর্ঘ এবং এর উচ্চতা ৯ ফুট। এই হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ১০ টন। বিদ্যুিবহীন হিমাগার নির্মাণে দিলীপকে সহযোগিতা করেছেন বীরগঞ্জের সবজি রফতানিকারক বকুল।


এ বিষয়ে গত ৫ জুলাই বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে এক কর্মশালা বীরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সকলেই এই ধরনের হিমাগারকে ব্যবসায়ী ও সাধারণ গ্রামীণ কৃষকদের উপকারী হিসেবে ও সময়োপযোগী বলে চিহ্নিত করেছে। দিলীপের পদ্ধতি অনুসরণ করে ১০ টন থেকে ২শ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন হিমাগার নির্মাণ করা সম্ভব বলে জানানো হয়। হিমাগারের বিকল্প হিসেবে এটি অত্যন্ত কার্যকরী বলে মনে করা হচ্ছে। নির্মাণ ব্যয়ও অত্যন্ত কম। এখানে আলু সংরক্ষণের খরচ কেজিপ্রতি প্রায় ১ টাকা অথচ কোল্ডস্টোরে এর খরচ ৫/৬ টাকা।


উল্লেখ্য, একটি ১ হাজার টন কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণ করতে খরচ হয় ন্যূনতম ২০ কোটি টাকা। তারপর প্রতিমাসে বিদ্যুত্ বিল দিতে হয় প্রায় ১ লাখ টাকা। যার কারণে আলু ও অন্যান্য সবজি সংরক্ষণের জন্য ব্যয় বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এই মাটির ঘরে নির্মিত হিমাগারে আলু ও সবজি সংরক্ষণ করতে কোন বিদ্যুত্ খরচ নেই। দেশে এখনও প্রায় ২/৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত্ ঘাটতি রয়েছে। সেক্ষেত্রে এ ধরনের একটি প্রযুক্তি সময়োপযোগী বলে বিশেষজ্ঞ মহল মনে করেন।


লেখক: মতিউররহমান, দিনাজপুর