ঘুরতে যাওয়া কিংবা যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজন হয়
গাড়ি। এ জন্য দ্বারস্থ হতে হয় রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ীদের কাছে। এ ব্যবসায় লাভও বেশ ভালো।
নিজের গাড়ি না থাকলেও ভালো যোগাযোগ থাকলেই শুরু করতে পারেন এ ব্যবসা। আর হাতে কিছু
পুঁজি থাকলে তো কথাই নেই। রেন্ট-এ কার ব্যবসার খুঁটিনাটি জানাচ্ছেন ইফতেখার রহমান
প্রথম দিকে গাড়ির
মালিক এবং গ্রাহকের মাঝে মধ্যস্বত্বকারী হিসেবেই শুরু করতে পারেন। এ জন্য খুব বেশি
পুঁজির প্রয়োজন হবে না। শুধু একটি দোকান বা অফিস হলেই চলবে। প্রথম দিকে দোকানের জায়গা
ছোট হলেই চলবে। তেমন সাজসজ্জারও প্রয়োজন নেই। তবে চেয়ার-টেবিল ও একটি আলমারি থাকলে
ভালো হয়। এ বাবদ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। দুটি গাড়ি নিয়ে শুরু করতে পারেন। আর
নিজস্ব গাড়ি নিয়ে শুরু করলে দক্ষ এবং বৈধ লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ দিতে হবে। এলাকায়
পরিচিতি, ধৈর্য এবং সুষ্ঠু পরিকল্পনা সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
অন্যান্য ব্যবসার মতো রেন্ট-এ কারের ব্যবসা শুরু করার
জন্য প্রয়োজন হয় ট্রেড লাইসেন্সের। এর সঙ্গে বিআরটিএ থেকে রেন্ট-এ কার ব্যবসার অনুমতিও
নিতে হয়। সেই সঙ্গে স্থানীয় রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য হতে পারেন।
তবে নিজস্ব গাড়ির জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন কাগজপত্রের।
এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য রোড পারমিট, লাইসেন্স, বীমা ইত্যাদি। আট
হাজার টাকা দিয়ে ট্যাক্স-টোকেনও করিয়ে নিতে হবে। গাড়ির কাগজপত্রের জন্য দালালের দ্বারস্থ
না হয়ে সরাসরি অফিসে গিয়ে কাগজ করানো উচিত।
কোন গাড়ির চাহিদা বেশি এবং দরদাম
প্রাইভেট কার এবং মাইক্রো_এ দুই ধরনের গাড়িই
গ্রাহকরা বেশি ভাড়া নেয়। তবে গাড়ি যেটাই হোক না কেন এর রং, নতুনত্বই গ্রাহককে
বেশি আকৃষ্ট করে। তাই গাড়ির মলিকের সঙ্গে চুক্তির সময় এ দুটি বিষয় খেয়াল রাখবেন। আর
নিজেই গাড়ি কিনতে চাইলে টয়োটা গাড়ির শোরুমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। বর্তমানে সুপার
জিএল গড়পড়তায় ২৪-২৬ লাখ টাকা, এক্স করোলা ২২ লাখ টাকা, প্রিমিও ৩০ লাখ টাকা, এলিয়ন ২৮ লাখ টাকা, হায়াস ২৬ লাখ টাকায়
কিনতে পারবেন। তবে পুরনো গাড়ি ৩ ভাগের ২ ভাগ বা এর চেয়েও কম দামে কিনতে পারবেন।
গাড়ি কিনবেন কোথা থেকে
রাজধানী ঢাকার কাকরাইল, তেজগাঁও, গুলশানসহ বিভিন্ন
এলাকায় গাড়ির শোরুম আছে। এসব শোরুম থেকে কিনতে পারেন। এ ছাড়া আমদানিকারকের সঙ্গে সরাসরি
যোগাযোগ করেও পছন্দ অনুযায়ী গাড়ি কিনতে পারেন।
গাড়ি ভাড়া দেওয়ার পদ্ধতি
বডি ভাড়া, প্যাকেজ এবং মাসিক ভাড়া_এই তিনভাবে গাড়ি
ভাড়া দেওয়া হয়। বডি ভাড়া পদ্ধতিতে গাড়ির গ্যাসসহ আনুষঙ্গিক সব খরচ সেবাগ্রহীতা বহন
করেন। এ ক্ষেত্রে এক দিনের জন্য গ্রাহককে দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত
দিতে হয়। প্যাকেজ পদ্ধতিতে দূরত্ব বিবেচনা করে গ্রাহকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে ভাড়া
নির্ধারণ করা হয়। মাসিক ভাড়া পদ্ধতিতে কিলোমিটার হিসাব করে ভাড়া আদায় করা হয়। বিভিন্ন
কম্পানি মাসিক ভাড়া পদ্ধতিতে রেন্ট-এ কার থেকে গাড়ি ভাড়া নেয়।
লাভ কেমন
রেন্ট-এ কার ব্যবসায় লাভের পরিমাণ নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের
ওপর। গাড়ি নিজস্ব না হলে প্রতি হাজারে ১০০ টাকা কমিশন পান রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ী। আর
নিজস্ব গাড়ির ক্ষেত্রে ভাড়ার পুরোটাই চলে আসে রেন্ট-এ কার ব্যবসায়ীর পকেটে। মাসিক ভাড়ার
ক্ষেত্রে কিলোমিটার হিসাবে ভাড়া পাওয়া যায়। প্রতি কিলোমিটার আট থেকে দশ টাকা হিসাবে
ভাড়া নেওয়া হয়। তবে গাড়ির পরিমাণ যত বেশি থাকবে এবং যত বেশি ভাড়া দেওয়া যাবে, লাভের পরিমাণ তত
বেশি।
আনুষঙ্গিক
রেন্ট-এ কার ব্যবসার পাশাপাশি দোকানে অন্যান্য ছোটখাটো
ব্যবসাও করতে পারেন। এর মধ্যে মোবাইল ফোনে টাকা রিচার্জ, ফটোকপি, কম্পিউটার কম্পোজ
করতে পারেন।
কিছু টিপস
* রেন্ট-এ কার ব্যবসার সফলতা নির্ভর করে পরিচিতির ওপর।
* গাড়ি ভাড়া দেওয়ার আগে গ্রাহক সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ
নিতে হবে।।
* পরিচিত, দক্ষ এবং বৈধ লাইসেন্সধারী চালক নিয়োগ
দিতে হবে।
* গাড়ির আনুষঙ্গিক কাগজপত্র যথাসময়ে নবায়ন করিয়ে নিতে
হবে।
0 comments:
মন্তব্য করুন