পছন্দের ছবিকে স্থায়িত্ব দিতে ছবি বাঁধাই করতে চান অনেকেই।
সে কারণে এ পেশায় আয়টাও বেশ। জানাচ্ছেন মেহেদী মামুন
ছবি বাঁধাই শেখার
জন্য পুঁথিগত পড়াশোনার সুযোগ নেই। তার চেয়ে ছবি বাঁধাই করা জানেন এমন কারো সানি্নধ্যে
থেকে হাতে-কলমে কাজ শেখাই সবচেয়ে ভালো। চাইলে কোনো দোকানে সহকারী হিসেবে কাজে যোগ দিয়ে
ধীরে ধীরে নিজেই ছবি বাঁধাইয়ের কাজ শিখতে পারেন। অল্প কিছু দিন কাজ করলেই ছবি বাঁধাইয়ের
পুরো ব্যাপারটা আপনার দখলে চলে আসবে। এভাবে যত দিন যাবে আপনার কাজের দক্ষতা ততই বাড়বে।
লোকেশন ও বিনিয়োগ
ছবি বাঁধাইয়ের ব্যবসা করার জন্য জনসমাগম বেশি এমন স্থানে
দোকান নেওয়া উত্তম। বিশেষ করে বাজারে, বাসস্ট্যান্ডে কিংবা মহল্লার সেই স্থান, যেখানে জনসমাগম আছে
এমন জায়গা উত্তম।
প্রাথমিকভাবে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করা
যায়। এই বিনিয়োগের একটা বড় অংশ চলে যায় দোকানের পজিশন নেওয়া ও ডেকোরেশনের পেছনে। বাকি
টাকা যন্ত্রপাতি কেনা, ফ্রেম কেনা, কাচ কেনা এবং কর্মচারীদের বেতন বাবদ
ব্যয় করতে হয়।
মালামাল সংগ্রহ
ছবি বাঁধাইয়ের জন্য কাঠের ফ্রেমগুলো স্থানীয় বাজার থেকে
কিনে নিজে ফ্রেম বানিয়ে নেওয়া ভালো। এতে লাভ বেশি থাকে। এ ছাড়া অন্যান্য ফ্রেম পাইকারি
মূল্যে ডিলারদের কাছ থেকে কিনে নিতে হয়। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক এবং ধাতব
পদার্থের ফ্রেম বিদেশ থেকে আমদানি হচ্ছে। ঢাকার গুলিস্তানে ফ্রেমের অসংখ্য আমদানিকারক
আছেন। সেখান থেকে এগুলো সংগ্রহ করা যায়। কাচ এবং তারকাঁটা সংগ্রহ করার জন্য স্থানীয়
বাজারের ওপর নির্ভর করতে পারেন।
আয়
আকার অনুসারে ছবি বাঁধাইয়ের মজুরি নির্ধারিত হয়। সাধারণত
৩০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পাওয়া যায়। এর সঙ্গে যোগ হয় ফ্রেমের দাম। ফ্রেমের দাম
থেকেও একটা লভ্যাংশ পাওয়া যায়। সব মিলিয়ে একটি ছবি বাঁধাই করে ৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত
আয় হতে পারে। সে হিসাবে সারা দিনে নূ্যনতম পাঁচটি ছবি বাঁধাই করতে পারলে মাসে সাত হাজার
থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে
মিরপুর-১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় তপু গ্লাস
হাউসের মালিক মো. আজম। ৪০ বছর ধরে ছবি বাঁধাইয়ের কাজ করছেন। আজম বলেন, 'ফ্রেম বানানোর ব্যবসা
খুব কঠিন কিছু নয়। সামান্য পুঁজি আর কাজের প্রতি একাগ্রতা থাকলে এ পেশায় সহজে উন্নতি
করা যায়। আমার এই ছোট্ট দোকানে সব খরচ বাদে মাসে ৩০ হাজার টাকার মতো আয় থাকে। অনেককে
কাজ শিখিয়েছি আমি। আমার এখানে কাজ শিখে চারজন কর্মচারী এখন নিজের দোকানের মালিক। ওরাও
খুব ভালো আছে।'
0 comments:
মন্তব্য করুন