পরিচ্ছেদঃ
৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় সালাত।
৯৮৩। আমর ইবনু আওন (রহঃ)
... আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম, এ সময় সুর্যগ্রহণ শুরু হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন
উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজের চাদর টানতে টানতে মসজিদে প্রবেশ করলেন এবং আমরাও প্রবেশ
করলাম। তিনি আমাদেরকে নিয়ে সূর্য প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দু’রাকাআত সালাত
(নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তিনি বললেনঃ কারো মৃত্যুর কারণে কখনো সূর্যগ্রহণ
কিংবা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন এ অবস্থা কেটে যাওয়া
পর্যন্ত সালাত আদায় করবে এবং দু’আ করতে থাকবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় সালাত।
৯৮৪। শিহাব ইবনু আব্বাদ
(রহঃ) ... আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন লোকের মৃত্যুর কারণে কখনো
সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহর নিদর্শন সমূহের মধ্যে দুটি
নিদর্শন। তাই তোমরা যখন সূর্যগ্রহন বা চন্দ্রগ্রহন হতে দেখবে, তখন দাঁড়িয়ে যাবে এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় সালাত।
৯৮৫। আসবাগ (রহঃ) ... ইবনু
উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, কারো মৃত্যুর বা জন্মের
কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তবে তা আল্লাহর নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি
নিদর্শন। কাজেই তোমরা যখনই গ্রহণ হতে দেখবে তখনই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৪. সুর্যগ্রহণের সময় সালাত।
৯৮৬। আবদুল্লাহ ইবনু
মুহাম্মদ (রহঃ) ... মুগীরা ইবন শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় যে দিন (তাঁর পুত্র) ইব্রাহীম (রাঃ) ইন্তেকাল করেন, সেদিন সূর্য গ্রহণ হয়েছিল। লোকেরা তখন বলতে লাগলো, ইব্রাহীম (রাঃ) এর মৃত্যুর কারণেই সুর্যগ্রহণ হয়েছিল। তখন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কারো মৃত্যু অথবা জন্মের কারণে সূর্য বা
চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা যখন তা দেখবে, তখন সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করবে এবং আল্লাহর নিকট দু’আ করবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৫. সূর্যগ্রহণের সময় সাদাকা করা।
৯৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু
মাসলামা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় একবার সূর্যগ্রহণ হল। তখন
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন।
তিনি দীর্ঘ সময় কিয়াম করেন, এরপর দীর্ঘক্ষণ রুকু’
করেন। এরপর পুনরায় (সালাতে) তিনি উঠে দাঁড়ান এবং দীর্ঘ কিয়াম করেন। অবশ্য তা প্রথম
কিয়াম চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি রুকু’ করেন এবং এ রুকু’ দীর্ঘ করেন। তবে তা
প্রথম রুকু চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। এরপর তিনি সিজদা করেন এবং সিজদাও দীর্ঘক্ষণ
করেন। এরপর তিনি প্রথম রাকা’আতে যা করেছিলেন তার অনুরূপ দ্বিতীয় রাকাআতে করেন এবং
যখন সূর্য প্রকাশিত হয় তখন সালাত শেষ করেন।
এরপর তিনি লোকজনের
উদ্দেশ্যে খুৎবা দান করেন। প্রথমে তিনি আল্লাহর
প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করেন। এরপর তিনি বলেনঃ সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন সমুহের
মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না।
কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন তোমরা আল্লাহর নিকট দু’আ করবে। তাঁর মহত্ব ঘোষণা
করবে এবং সালাত আদায় করবে ও সাদাকা প্রদান করবে। এরপর তিনি আরো বললেনঃ হে উম্মতে
মুহাম্মদী! আল্লাহর কসম, আল্লাহর কোন বান্দা যিনা
করলে কিংবা কোন নারী যিনা করলে, আল্লাহর চাইতে বেশী
অপছন্দকারী কেউ নেই। হে উম্মাতে মুহাম্মদী! আল্লাহর কসম, আমি যা জানি তা যদি তোমরা জানতে তা হলে তোমরা অবশ্যই কম হাঁসতে ও বেশি কাঁদতে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৬. সালাতুল কুসূফের জন্য ‘আস-সালাতু জামিয়াতুন’
বলে আহ্বান।
৯৮৮। ইসহাক (রহঃ) ...
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় যখন সূর্যগ্রহণ হল, তখন (সালাতে) সমবেত হওয়ার জন্য) ‘আস-সালাতু জামিয়াতুন’ বলে আহ্বান জানানো হল।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৭. সূর্যগ্রহণের সময় ইমামের খুৎবা।
وَقَالَتْ عَائِشَةُ وَأَسْمَاءُ خَطَبَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আয়িশা
ও আসমা (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম খুৎবা দিচ্ছিলেন।
৯৮৯।
ইয়াহইয়া ইবনু বুকাইর ও আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবৎকালে একবার সূর্যগ্রহন হয়। তখন তিনি মসজিদে গমন
করেন। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর লোকেরা তাঁর পেছনে
সারিবদ্ধ হল। তিনি তাকবীর বললেন। তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করলেন। এরপর তাকবীর বললেন এবং দীর্ঘক্ষণ রুকু’তে থাকলেন। এরপর سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলে দাঁড়ালেন এবং সিজদায় না গিয়েই আবার দীর্ঘক্ষন কিরাআত পাঠ করলেন। তবে তা
প্রথম কিরাআতের চাইতে অল্পস্থায়ী।
তারপর
তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ বললেন এবং দীর্ঘ রুকু’ করলেন, তবে তা প্রথম রাকাআতের
চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি বললেনঃ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ এরপর সিজদায় গেলেন। তারপর
তিনি পরবর্তী রাকাআতেও অনুরূপ করলেন এবং এভাবে চার সিজদার সাথে চার রাকআত পুর্ণ
করলেন। তাঁর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করার পূর্বেই সুর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল।
এরপর
তিনি দাঁড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন এবং বললেনঃ সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ
আল্লাহর নিদর্শন সমুহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন মাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে
গ্রহণ হয় না। কাজেই যখনই তোমরা গ্রহণ হতে দেখবে, তখনই ভীত হয়ে সালাতের দিকে
গমন করবে।
রাবী
বর্ণনা করেন, কাসীর ইবনু আব্বাস (রহঃ) বলতেন, আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুর্যগ্রহণ সম্পর্কে আয়িশা (রাঃ) থেকে উরওয়া
(রহঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। তাই আমি উরওয়াকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনার ভাই (আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর) তো মদিনায় যেদিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল, সেদিন ফজরের সালাতের ন্যায় দু’রাকাআত সালাত আদায়ের অতিরিক্ত কিছু করেননি। তিনি
বললেন, তা ঠিক, তবে তিনি নিয়ম অনুসারে ভুল
করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৮. ‘কাশাফাতিশ শামসু’ বলবে, না ‘খাসাফাতিশ শামসু’ বলবে? আল্লাহ্ তা’লা বলেছে, ওয়া খাসাফাল কামারু’।
৯৯০। সায়ীদ ইবনু উফাইর
(রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্যগ্রহণের সময় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। তিনি দাঁড়িয়ে
তাকবীর বললেন। এরপর দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করেন। তারপর তিনি দীর্ঘ রুকু করলেন। এরপর
মাথা তুললেন, আর سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলে আগের মতই দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করলেন। তবে তা
আগের কিরাআতের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকু করলেন, তবে এ রুকু প্রথম রুকুর চাইতে কম দীর্ঘ ছিল। এরপর তিনি দীর্ঘ সিজদাহ করলেন।
তারপর তিনি শেষ রাকাআতে প্রথম রাকাআতের অনুরূপ করলেন এবং সালাম ফিরালেন। তখন
সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল।
এরপর লোকদের উদ্দেশ্যে
তিনি খুৎবা দিলেন। খুতবায় তিনি সূর্যগ্রহণ
ও চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কে বলেন, এ হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শন
সমুহের মধ্যে দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে গ্রহণ হয় না। কাজেই
যখন তোমরা তা দেখবে তখন তোমরা ভীত বিহ্বল অবস্থায় সালাত (নামায/নামাজ)-এর দিকে গমন
করবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৬৯. নবী (ﷺ) এর উক্তিঃ আল্লাহ্ তা’লা সূর্যগ্রহণ দিয়ে তাঁর বান্দাদের সতর্ক
করেন।
قَالَهُ أَبُو مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আবু
মুসা আশ’আরী (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তা বর্ণনা করেছেন।
৯৯১।
কুতাইবা ইবনু সায়ীদ (রহঃ) ... আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন সমুহের মধ্যে দুটি
নিদর্শন। কারো মৃত্যুর কারণে এ দু’টির গ্রহণ হয় না। তবে এ দিয়ে আল্লাহ তা’লা তাঁর
বান্দাদের সতর্ক করেন।
ইমাম
বুখারী (রহঃ) বলেন, আবদুল ওয়ারিস, শু’আইব, খালিদ ইবনু আবদুল্লাহ, হাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ)
ইউনুস (রহঃ) থেকে এ দিয়ে আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করেন’ বাক্যটি বর্ণনা করেন
নি; আবূ মূসা (রহঃ) মুবারক (রহঃ) স্থলে হাসান (রহঃ) থেকে ইউনুস
(রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। তিনি বলেন, আমাকে আবূ বাকরা (রাঃ)
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বলেন, নিশ্চই আল্লাহ এ দিয়ে তাঁর
বান্দাদেরকে সতর্ক করেন। আশ’আস (রহঃ) হাসান (রহঃ) থেকে ইউনুস (রহঃ) এর অনুসরণ
করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭০. সূর্যগ্রহণের সময় কবর আযাব থেকে পানাহ
চাওয়া।
৯৯২। আবদুল্লাহ ইবনু
মাসলামা (রহঃ) ... নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ)
থেকে বর্ণিত, এক ইয়াহুদী মহিলা তাঁর নিকট কিছু জিজ্ঞাসা করতে এলো। সে
আয়িশা (রাঃ) কে বলল, আল্লাহ তা’লা আপনাকে কবর
আযাব থেকে রক্ষা করুন। এরপর আয়িশা (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
জিজ্ঞাসা করেন,কবরে কি মানুষকে আযাব দেওয়া হবে? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই।
পরে কোন এক সকালে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ারীতে আরোহণ করেন। তখন
সূর্যগ্রহণ আরম্ভ হয়। তিনি সূর্যোদয় ও দুপুরের মাঝামাঝি সময় ফিরে আসেন এবং
কামরাগুলোর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করেন। এরপর তিনি সালাতে দাঁড়ালেন এবং লোকেরা তাঁর
পেছনে দাঁড়াল। তারপর তিনি দীর্ঘ কিয়াম করেন। এরপর তিনি দীর্ঘ রুকু করেন পরে মাথা
তুলে দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে এ কিয়াম আগের কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল।
এরপর আবার তিনি দীর্ঘ রুকু
করেন, তবে এ রুকু’ আগের রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি
মাথা তুললেন এবং সিজদায় গেলেন। এরপর তিনি দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম করলেন। তবে তা
প্রথম কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর দীর্ঘ রুকু করলেন। এ রুকু প্রথম
রাকাআতের রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি মাথা উঠালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম
করলেন এবং এ কিয়াম আগের কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি মাথা উঠালেন এবং
দীর্ঘ কিয়াম করলেন এবং এ কিয়াম আগের কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। পরে মাথা
তুললেন এবং সিজদায় গেলেন। এরপর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলেন। আল্লাহর যা ইচ্ছা
তিনি তা বললেন এবং কবর আযাব থেকে পানাহ চাওয়ার জন্য উপস্থিত লোকদের নির্দেশ দেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭১. সূর্যগ্রহনের সালাতে দীর্ঘ সিজদা করা।
৯৯৩। আবূ নু’আইম (রহঃ) ...
আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় যখন সূর্যগ্রহণ হয় তখন
‘আস-সালাতু জামিয়াতুন’ বলে ঘোষণা দেয়া হয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
তখন এক রাকাআতে দু’বার রুকু করেন, এরপর দাঁড়িয়ে দ্বিতীয়
রাকাআতে দু’বার রুকু করেন এরপর বসেন আর ততক্ষণে সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে যায়।
বর্ণনাকারী বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, এ সালাত (নামায/নামাজ)
ব্যতীত এত দীর্ঘ সিজদা আমি কখনো করিনি।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭২. সূর্যগ্রহণের সালাত জামা’আতে আদায় করা।
وَصَلَّى ابْنُ عَبَّاسٍ لَهُمْ فِي صُفَّةِ زَمْزَمَ. وَجَمَعَ عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ. وَصَلَّى ابْنُ عُمَرَ
ইবন
আব্বাস (রাঃ) লোকদেরকে নিয়ে যমযমের সুফফায় সালাত আদায় করেন এবং আলী ইবন আবদুল্লাহ
ইবন আব্বাস (রাঃ) জামাআতে সালাত আদায় করেছেন। ইবন উমর (রাঃ) গ্রহণের সালাত আদায়
করেছেন।
৯৯৪।
আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন সালাত
আদায় করেন এবং তিনি সুরা বাকারা পাঠ করতে যত সময় লাগে সে পরিমাণ দীর্ঘ কিয়াম করেন।
এরপর দীর্ঘ রুকু’ করেন। তারপর মাথা তুলে পুনরায় দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে তা প্রথম
কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকু করলেন। তবে তা প্রথম রুকুর
চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি সিজদা করেন। আবার দাঁড়ালেন এবং দীর্ঘ কিয়াম
করলেন। তবে তা প্রথম কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর আবার দীর্ঘ রুকু করেন, তবে তা আগের রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি মাথা তুললেন এবং দীর্ঘ
সময় পর্যন্ত কিয়াম করলেন, তবে তা প্রথম কিয়াম
অপেক্ষা অল্পস্থায়ী ছিল। আবার তিনি দীর্ঘ রুকু করেন, তবে তা প্রথম রুকু অপেক্ষা
অল্পস্থায়ী ছিল। এরপর তিনি সিজদা করেন এবং সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করেন। ততক্ষণে
সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গিয়েছে।
তারপর
তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন সমুহের মধ্যে দু’টি
নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এ দু’টির গ্রহণ হয় না। কাজেই যখন তোমরা
গ্রহণ দেখবে তখনই আল্লাহ কে স্মরণ করবে। লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা দেখলাম, আপনি নিজের জায়গা থেকে কি
যেন ধরেছেন, আবার দেখলাম, আপনি যেন পেছনে সরে এলেন।
তিনি বললেনঃ আমি তো জান্নাত দেখছিলাম এবং একগুচ্ছ আঙ্গুরের প্রতি হাত বাড়িয়ে
ছিলাম। আমি তা পেয়ে গেলে, দুনিয়া কায়িম থাকা পর্যন্ত
অবশ্য তোমরা তা খেতে পারতে। এরপর আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়, আমি আজকের মত ভয়াবহ দৃশ্য কখনো দেখিনি। আর আমি দেখলাম, জাহান্নামের অধিকাংশ বাসিন্দা স্ত্রী লোক।
লোকেরা
জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কী কারণে? তিনি বললেনঃ তাদের কুফরীর
কারণে। জিজ্ঞাসা করা হল, তারা কি আল্লাহর সাথে
কুফরী করে? তিনি জবাব দিলেন, তারা স্বামীর অবাধ্য থাকে
এবং ইহসান অস্বীকার করে। তুমি যদি তাদের কারো প্রতি সারা জীবন সদাচরণ কর, এরপর সে তোমার থেকে (যদি) সামান্য ত্রুটি পায়, তা হলে বলে ফেলে, তোমার থেকে কখনো ভালো ব্যবহার পেলাম না।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭৩. সূর্যগ্রহণের সময় পুরুষদের সঙ্গে মহিলাদের সালাত।
৯৯৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ
(রহঃ) ... আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সূর্যগ্রহণের সময় আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা
(রাঃ) এর নিকট গেলাম। তখন লোকজন দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিল? তখন আয়িশা (রাঃ)ও সালাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম লোকদের কি হয়েছে? তখন তিনি হাত দিয়ে আসমানের দিকে ইশারা করলেন এবং ‘সুবহানাল্লাহ’ বললেন। আমি
বললাম, এ কি কোন নিদর্শন? তখন তিনি ইশারায় বললেন, হ্যাঁ। আসমা (রাঃ) বলেন, আমিও দাঁড়িয়ে গেলাম। এমনকি
(দীর্ঘক্ষণ দাঁড়ানোর ফলে) আমি প্রায় বেহুঁশ হয়ে পড়লাম এবং মাথায় পানি ঢালতে
লাগলাম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলেন, তখন আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ণনা করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি এ স্থান থেকে
দেখতে পেলাম, যা এর আগে দেখিনি, এমনকি জান্নাত এবং
জাহান্নাম। আর আমার নিকট ওহী পাঠানো হয়েছে যে, নিশ্চয়ই তোমাদেরকে কবরের
মধ্যে দাজ্জালের ফিতনার ন্যায় অথবা বলেছেন তার কাছাকাছি ফিতনায় লিপ্ত করা হবে।
বর্ণনাকারী বলেন, (মিসলা ও কারীবান) দুটির
মধ্যে কোনটি আসমা (রাঃ) বলেছেন, তা আমার মনে নেই। তোমাদের
একেকজনকে উপস্থিত করা হবে এবং তাকে প্রশ্ন করা হবে। এ ব্যাক্তি সম্পর্কে কি জানো? তখন মু’মিন (ঈমানদার) অথবা ‘মুকিন’ (বিশ্বাসী) বলবেন – বর্ণনাকারী বলেন যে, আসমা (রাঃ) মু’মিন শব্দ বলেছিলেন, না মুকিন তা আমার স্মরণ
নেই, তিনি হলেন, মুহাম্মাদুর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্পষ্ট দলীল ও হিদায়াত নিয়ে আমাদের কাছে
এসেছিলেন এবং আমরা এতে সাড়া দিয়ে ঈমান এনেছি ও তাঁর অনুসরণ করেছি।
এরপর তাঁকে বলা হবে, তুমি নেককার বান্দা হিসেবে ঘুমিয়ে থাক। আমরা অবশ্যই জানতাম যে, নিশ্চিতই তুমি দৃঢ়বিশ্বাস স্থাপনকারী ছিলে। আর মুনাফিক কিংবা সন্দেহকারী
বর্ণনাকারী বলেন, আসমা (রাঃ) ‘মুনাফিক’ না
‘সন্দেহকারী’ বলেছিলেন তা আমার মনে নেই, সে শুধু বলবে, আমি কিছুই জানিনা। আমি মানুষকে কিছু বলতে শুনেছি এবং আমিও তাই বলেছি।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭৪. সূর্যগ্রহনের সময় গোলাম আযাদ করা পছন্দনীয়।
৯৯৬। রাবী ইবনু ইয়াহইয়া
(রহঃ) ... আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্যগ্রহনের সময় গোলাম আযাদ করার
নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭৫. মসজিদে সূর্যগ্রহণের সালাত।
৯৯৭। ইসমাইল (রহঃ) ...
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ইয়াহুদী মহিলা তাঁর
নিকট কিছু জিজ্ঞাসা করতে এল। মহিলাটি বলল, আল্লাহ আপনাকে কবরের আযাব
থেকে পানাহ দিন। তারপর আয়িশা (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে
জিজ্ঞাসা করেন, কবরে কি মানুষকে আযাব দেয়া
হবে? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি
আল্লাহর কাছে পানাহ চাই কবরের আযাব থেকে। পরে একদিন সকালে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ারীতে আরোহণ করেন। তখন সূর্যগ্রহণ আরম্ভ হয়।
তিনি ফিরে এলেন, তখন ছিল সূর্যোদয় ও
দুপুরের মাঝামাঝি সময়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর
হুজরাগুলোর মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করলেন। তারপর তিনি সালাত (নামায/নামাজ) দাঁড়ালেন
এবং লোকেরাও তাঁর পেছনে দাঁড়ালো। তিনি দীর্ঘ কিয়াম করলেন। এরপর দীর্ঘ রুকু করলেন।
তারপর মাথা তুলে আবার দীর্ঘ কিয়াম করেন। তবে এ কিয়াম প্রথম কিয়ামের চাইতে
অল্পস্থায়ী ছিল।
এরপর তিনি আবার দীর্ঘ রুকু
করেন। তবে এ রুকু প্রথম রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। এরপর তিনি আবার দীর্ঘ রুকু
করেন। তবে এ রুকু প্রথম রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি মাথা তুললেন এবং
দীর্ঘ সিজদা করলেন। এরপর তিনি আবার দাঁড়িয়ে দীর্ঘ কিয়াম করেন। অবশ্য তা প্রথম
কিয়ামের চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি দীর্ঘ রুকু করলেন, তা প্রথম রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর দীর্ঘ রুকু করেন। অবশ্য এ রুকু
প্রথম রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। এরপর তিনি সিজদা করেন। এ সিজদা প্রথম সিজদার
চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় শেষ করেন। এরপরে রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর যা ইচ্ছা তাই বললেন। পরিশেষে তিনি সবাইকে
কবর আযাব থেকে পানাহ চাওয়ার নির্দেশ দেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭৬. কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ হয়
না।
رَوَاهُ أَبُو بَكْرَةَ وَالْمُغِيرَةُ وَأَبُو مُوسَى وَابْنُ عَبَّاسٍ وَابْنُ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ
আবু
বাকরা, মুগীরা, আবু মূসা, ইবন আব্বাস ও ইবন উমর (রাঃ) এ বিষয়ে বর্ণনা করেছেন।
৯৯৮।
মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কারো মৃত্যুর ও জন্মের
কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। এগুলো আল্লাহর নিদর্শন সমুহের মধ্যে দু’টি
নিদর্শন। কাজেই যখন তোমরা তা দেখবে তখন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭৬. কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ হয়
না।
৯৯৯। আবদুল্লাহ ইবনু
মুহাম্মদ (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। নাবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন দাঁড়ালেন এবং লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করলেন। তিনি কিরাআত দীর্ঘ করেন। এরপর তিনি দীর্ঘ রুকু করেন। তারপর তিনি মাথা
তুলে এবং দীর্ঘ কিরাআত পড়েন। তবে তা প্রথম কিরাআতের চাইতে কম ছিল। আবার তিনি রুকু
করেন এবং রুকু দীর্ঘ করেন। তবে এ রুকু প্রথম রুকু’র চাইতে অল্পস্থায়ী ছিল। তারপর
তিনি মাথা তুলেন এবং দীর্ঘ কিরাআত পড়েন। তবে তা প্রথম কিরাআতের চাইতে কম ছিল। আবার
তিনি রুকু করেন এবং রুকু দীর্ঘ করেন। তবে এ রুকু প্রথম রুকুর চাইতে অল্পস্থায়ী
ছিল। তারপর তিনি মাথা তুলেন এবং দুটি সিজদা করেন। এরপর তিনি দাঁড়ালেন এবং দ্বিতীয়
রাকাআতেও অনুরূপ করেন।
তারপর তিনি দাঁড়িয়ে বললেনঃ
সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে হয় না। আল্লাহ্র
নিদর্শন সমুহের মধ্যে এ হল দুটি নিদর্শন; যা আল্লাহ্ তাঁর
বান্দাদের দেখিয়ে থাকেন। কাজই যখন তোমরা তা দেখবে তখন ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায়
সালাতের দিকে গমন করবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭৭. সূর্যগ্রহণের সময় আল্লাহ্র যিকর।
رَوَاهُ ابْنُ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا
এ
বিষয়ে ইবন আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন।
১০০০।
মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) ... আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার সূর্যগ্রহণ হল, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় উঠলেন এবং
কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন। এরপর তিনি মসজিদে আসেন এবং এর আগে আমি তাঁকে
যেমন করতে দেখেছি, তার চাইতে দীর্ঘ সময় ধরে
কিয়াম, রুকু ও সিজদা সহকারে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর তিনি
বললেনঃ এগুলো হল নিদর্শন যা আল্লাহ পাঠিয়ে থাকেন, তা কারো মৃত্যু বা জন্মের
কারণে হয় না। বরং আল্লাহ তা’লা এর দ্বারা তাঁর বান্দাদের সতর্ক করেন। কাজেই যখন
তোমরা এর কিছু দেখতে পাবে, তখন ভীত বিহ্বল অবস্থায়
আল্লাহর যিকর, দু’আ এবং ইসতিগফারের দিকে অগ্রসর হবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৭৮. সূর্যগ্রহনের সময় দু'আ।
قَالَهُ أَبُو مُوسَى وَعَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এ
বিষয়ে আবু মূসা ও আয়িশা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা
করেছেন।
১০০১।
আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) ... মুগীরা ইবনু শুবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এর পুত্র) ইব্রাহিম
(রাঃ) যে দিন ইন্তেকাল করেন, সে দিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল।
লোকেরা বলল, ইব্রাহিম (রাঃ) এর মৃত্যুর কারণেই সূর্যগ্রহণ হয়েছে। রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বললেনঃ নিশ্চই সূর্য চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন
সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। করো মৃত্যু বা জন্মের কারণে এ দু’টো গ্রহণ হয় না।
কাজেই যখন তোমরা এদের গ্রহণ হতে দেখবে, তখন তাদের গ্রহণ মুক্ত
হওয়া পর্যন্ত আল্লাহর নিকট দু’আ করবে এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে থাকবে।
পরিচ্ছেদঃ ৬৮০. চন্দ্রগ্রহণের সালাত।
باب قَوْلِ الإِمَامِ فِي خُطْبَةِ الْكُسُوفِ أَمَّا بَعْدُ
وَقَالَ أَبُو أُسَامَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ أَخْبَرَتْنِي فَاطِمَةُ بِنْتُ الْمُنْذِرِ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ فَانْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ فَخَطَبَ، فَحَمِدَ اللَّهَ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ " أَمَّا بَعْدُ ".
৬৭৯.
অনুচ্ছেদঃ সূর্যগ্রহণের খুতবায় ইমামের “আম্মা-বা’দু’ বলা। আবূ উসামা (র.) বলেন
হিশাম (র.) …..
আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত শেষ করলেন আর এদিকে
সূর্যগ্রহণ মুক্ত হয়ে গেল। এরপর তিনি খুতবা দিলেন। এতে তিনি প্রথমে আল্লাহর যথাযথ
প্রশংসা করলেন। এবপর তিনি বললেনঃ ’আম্মা বা’দু’।
১০০২।
মাহমূদ (রহঃ) ... আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। তখন তিনি
দু’রাকা’আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।
পরিচ্ছেদঃ ৬৮০. চন্দ্রগ্রহণের সালাত।
১০০৩। আবূ মা’মার (রহঃ)
... আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় সূর্যগ্রহণ হল। তিনি বের হয়ে তাঁর চাঁদর
টেনে টেনে মসজিদে পৌঁছালেন এবং লোকজনও তাঁর কাছে একত্রিত হল। তারপর তাঁদের নিয়ে
দু’রাকা’আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর সূর্যগ্রহণ মুক্ত হলে তিনি বললেনঃ
সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শন সমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো্ মৃত্যুর কারণে
এ দু’টোর গ্রহণ ঘটে না। কাজেই যখন গ্রহণ হবে, তা মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত
সালাত আদায় করবে এবং দু’আ করতে থাকবে। এ কথা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
এ কারনেই বলেছেন যে, সেদিন তাঁর পুত্র ইব্রাহিম
(রাঃ) এর ওফাত হয়েছিল এবং লোকেরা সে ব্যাপারে বলাবলি করছিল।
পরিচ্ছেদঃ ৬৮১. সূর্যগ্রহনের সালাতে প্রথম রাকা’আত হবে
দীর্ঘতর।
১০০৪। মাহমূদ ইবনু গাইলান
(রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূর্যগ্রহণের সময় লোকদের নিয়ে দু’রাক’আতে চার রুকূ’সহ সালাত (নামায/নামাজ)
আদায় করেন। প্রথমটি (রাকা’আত দ্বিতীয়টির চাইতে) দীর্ঘস্থায়ী ছিল।
পরিচ্ছেদঃ ৬৮২. সূর্যগ্রহণের সালাতে সশব্দে কিরআত পাঠ।
১০০৫। মুহাম্মদ ইবনু
মিহরান (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্যগ্রহণের সালাতে তাঁর কিরআত সশব্দে
পাঠ করেন। কির’আত সমাপ্ত করার পর তাকবীর বলে রুকূ’ করেন। যখন রুকূ’ থেকে মাথা
তুললেন, তখন বললেন,سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ، رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ তারপর এ গ্রহণ-এর সালাতই তিনি আবার কিরআত পাঠ করেন এবং চার
রুকূ’ ও চার সিজদাহ সহ দু’ রাকা’আত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। বর্ণনাকারী
আওযায়ী (রহঃ) ও অন্যান্য রাবীগণ বলেন, যুহরী (রহঃ)-কে উরওয়া
(রহঃ)-এর মাধ্যমে আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে সূর্যগ্রহণ হলে তিনি একজনকে
‘আস্-সালাতু জামিয়াতুন’ বলে ঘোষণা দেওয়ার জন্য প্রেরণ করেন। তারপর তিনি অগ্রসর হন
এবং চার রুকূ ও চার সিজদাহ সহ দু’ রাকা’আত সালাত আদায় করেন।
ওয়ালীদ (রহঃ) বলেন, আমাকে আবদুর রাহমান ইবনু নামির আরো বলেন যে, তিনি ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে অনুরূপ শুনেছেন যুহরী (রহঃ) এরূপ করেন নি। তিনি যখন মদিনায় গ্রহণ-এর সালাত আদায় করেন, তখন ফজরের সালাতের ন্যায় দু’রাকা’আত সালাত আদায় করেন। উরওয়া (রহঃ) বললেন, হাঁ, তিনি নিয়ম অনুসরণে ভুল করেছেন। সুলাইমান ইবনু কাসীর (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে সশব্দে কিরআতের ব্যাপারে ইবনু কাসীর (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
0 comments:
মন্তব্য করুন