দেশের প্রথম ডাবল জাতের ‘প্রাউজলা’
ও ‘ভৈরব’
জাতের রজনীগন্ধার চাষে শার্শার ফুলচাষিদের
ভাগ্য ফিরেছে। বেশি
লাভের আশায় ওই দুই
প্রজাতির রজনীগন্ধা চাষেকৃষকদের মাঝে সাড়া পড়ে
গেছে।বাংলাদেশের
মধ্যে প্রথম প্রাউজলা রজনী
চাষি হিসেবে শার্শার রাজনগরের সাইফুল।
ইসলাম
লাট স্বল্প দিনেই স্বাবলম্বী
হয়ে উঠেছেন। প্রাউজলা
রজনীগন্ধারবীজ সংগ্রহে তাই এলাকার চাষিদের
মধ্যে সাড়া পড়ে গেছে।
চাষিরা বলছেন, দেশি ফুল
দুই-তিনদিনের মধ্যে ঝরে যায়। তবে
নতুন এই দুইজাতের ফুল
থাকে ১০ থেকে ১২দিন। সুগন্ধও
অনেক বেশি। দেশি
রজনীগন্ধা একশ’ স্টিকের দাম
যেখানে ৮০ থেকে ১৫০
টাকা সেখানে উন্নতজাতের প্রাউজলারজনীগন্ধার
একশ’ স্টিক দুই হাজার
টাকায় বিক্রি হচ্ছে।দুই বছর আগে
প্রাউজলা ও ভৈরব জাতের
রজনীগন্ধার চাষ করে ভাগ্য
বদলিয়েছেন শার্শার রাজনগর গ্রামের আব্দুল
হাইয়ের ছেলে সাইফুল আলম।তিনি
বলেন, ‘দুই বছর আগে
শষ্য বহুমুখিকরণ প্রকল্পের (এসসিডিপি) প্রকল্পপরিচালক ফুল বিশেষজ্ঞ ফারজানা
ইয়াছমিন আমাকে ভারতীয় এই
প্রাউজলা জাতের১৮০টি বীজ দেন।
সেখান থেকে চারা তৈরি
করে ১৩ শতক জমিতে
চাষ করি।পরীক্ষামূলকভাবে
আমি অল্প জমিতে খুব
কম খরচে প্রাউজলার বাম্পার
ফলনপেয়েছি।’
সাইফুলজানান,
ফারজানা ইয়াছমিনের দেওয়া সেই বীজ
থেকে চারা উৎপাদন করে
তা দিয়েএবারই ব্যবসায়ীক উদ্দেশে চাষ করেন তিনি। মাত্র
১৮ হাজার টাকা খরচ
করে ১৩শতক জমিতে লাগানো
ফুল বিক্রি করেছেন দুই
লাখ টাকায়। এখনো
ওই জমিতে যে ফুলরয়েছে
তা আরো ৫০হাজার টাকা
বিক্রি করতে পারবেন বলে
আশা করছেন তিনি।
রামনগর গ্রামের ফুলচাষি
আরসাদ আলী বলেন, ‘এই
বছর সাইফুলের কাছ থেকে বীজসংগ্রহ
করে রজনীগন্ধার চাষ করেছি।
ফলন ভালো হয়েছে।
আশা করছি এ বছর
এক লাখটাকার ফুল বিক্রি করতে
পারব।’ শার্শা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক
কুমার সরকার বলেন, ‘দেশের
বিভিন্নস্থানে রজনীগন্ধার চাষ হলেও প্রাউজলা
ও ভৈরব জাতের রজনীগন্ধার
চাষ কোথাও হয়না।
দেশের একমাত্র শার্শা উপজেলায় পরীক্ষামূলক
‘শষ্য বহুমুখিকরণপ্রকল্পের’ আওতায় এই দুই
প্রজাতির রজনীগন্ধার চাষ করা হয়েছে।’
তিনি
আরো বলেন, ‘গত বছর
শার্শায় দুই হেক্টর জমিতে
রজনীগন্ধা ফুলের চাষহলেও এই
বছর চাষ হয়েছে ১০
হেক্টর জমিতে। অধিক
লাভ হওয়ায় চাষিরা প্রাউজলা
ওভৈরব জাতের রজনীগন্ধার চাষ
করেছেন।’ শার্শার
ওই ব্লকের উপ সহকারী
কৃষি কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, ‘দিনদিন চাষের
ধরন পাল্টে যাচ্ছে।
কৃষিতে উন্নত মানের প্রযুক্তি
ব্যবহার করায়একের পর এক বিপ্লব
ঘটছে যশোরের ‘খাদ্য ভাণ্ডার’ খ্যাত
শার্শার উর্বরভূমিতে। উন্নত
জাতের ধান চাষের পাশাপাশি
এখানে কৃষকরা বিভিন্ন প্রজাতির
ফুলচাষেও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। বেশি
লাভ পাওয়ায় অধিকাংশ চাষি
ঝুঁকছেন প্রাউজলাফুল চাষের দিকে।
কিন্তু বীজ সঙ্কটের কারণে
চাষিরা ব্যাপকহারে চাষ করতেপারছেন না।
0 comments:
মন্তব্য করুন