ঝালকাঠিতে সোনালি জাতের মুরগি উত্পাদনে দুই ভাইয়ের সাফল্য

ঝালকাঠি নাচনমহল ইউনিয়নের ডেবরা গ্রামে তুষ পদ্ধতিতে সোনালি জাতের মুরগির বাচ্চা ফুটিয়ে সাফল্য অর্জন করেছেন দুই ভাই মিজান ও মিরাজ। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৩ হাজার সোনালি জাতের মুরগির বাচ্চা নিয়ে যাত্রা শুরু করে তাদের প্রতিষ্ঠিত শাফিন আদর্শ খামার। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে তুষ পদ্ধতিতে এখানে বাচ্চা ফোটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এখানে সোনালি জাতের মা মুরগির ডিম দিয়ে বাচ্চা ফোটানো হয়।
মিজান ও মিরাজ জানান, প্রতিদিন খামার থেকে পাওয়া ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো পর্যন্ত মোট সময় লাগে ২১-২২ দিন। এ পদ্ধতির মাধ্যমে বিদ্যুত্ ছাড়াই কম খরচে বাচ্চা ফোটানো সম্ভব। এ ধরনের উদ্যোগের কারণ সম্পর্কে মিরাজুর রহমান সোহেল বলেন, বড় ভাই মিজানুর রহমান মাসুদের পরিকল্পনায় আমাদের নিজস্ব জায়গাতেই এ খামার গড়ে তোলা হয়েছে। এই খামার করার কারণে আমাদের দুই ভাইয়ের সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি এলাকার বেকার যুবকদেরও কর্মসংস্থান হয়েছে।
এই খামারে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে ফার্মে কর্মরতরা বলেন, প্রতিদিন খামার থেকে পাওয়া ডিমগুলো রোদে তিন ঘণ্টা তাপ দিয়ে কাপড়ে বাঁধা হয়। এরপর কাপড়ে বাঁধা ডিমের পোঁটলাগুলো কাঠের তৈরি বাক্সের ভেতরে বাঁশের চাটাই দিয়ে বানানো ঝুড়িতে তুষের ভেতরে ১৬-১৭ দিন রাখা হয়। এ সময় বাক্সের ভেতরে হারিকেন জ্বালিয়ে সামান্য তাপ দেয়া হয়। এখান থেকে ডিমগুলো বের করে কাঠের টেবিলে রাখা কাপড়ের ওপর রেখে তার ওপর লেপ দিয়ে ৫ দিন ঢেকে রাখা হয়। এরপর ধীরে ধীরে ডিম থেকে বাচ্চা বেরিয়ে আসে। বাচ্চাগুলো বের হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা বিশেষ যত্নে রাখা হয়।
শাফিন আদর্শ খামারের উদ্যোক্তা মিজান ও মিরাজ জানান, বর্তমানে এ ফার্মে ১২শ’ মুরগি আছে। প্রতিদিন এখান থেকে প্রায় সাড়ে ৬শ’ ডিম পাওয়া যাচ্ছে। এগুলোকে পর্যায়ক্রমে তুষ পদ্ধতিতে ফুটিয়ে এজেন্টের কাছে বিক্রি করা হয়।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মাওলা জগলুল বলেন, সোনালি জাতের মুরগির মাংস ব্রয়লারের চেয়ে সুস্বাদু এবং প্রচুর চাহিদা আছে। বিশেষ করে বিয়েসহ সামাজিক অনুষ্ঠানে রোস্ট করার জন্য এ জাতটি সবচেয়ে ভালো। শুনেছি ঝালকাঠির নলছিটিতে তুষ পদ্ধতিতে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে একটি খামার করা হয়েছে, তবে যাওয়া হয়নি