ফরেক্স বা স্পট মার্কেট হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা কেনা বেচার স্থান। ফরেক্স হল দুনিয়ার বৃহত্তম ফিনান্সিয়াল মার্কেট।ফরেক্স মার্কেট হচ্ছে ট্রেডারদের মার্কেট। যেখানে মার্কেট সপ্তাহে ৫ দিন খোলা থাকে। এখানে সেকেন্ডে হাফ বিলিয়ন ডলার লেনদেন হয়ে যায় কিন্তু রেট বেশী উঠানামা করে না। এই মার্কেটে প্রতিদিন ৪ ট্রিলিয়ন ডলার লেনদেন হয় ,যা সব স্টক মার্কেটের চেয়েও ১০ বা ১৫ গুন বেশী।
এখন আসি ফরেক্স মার্কেটে কি ট্রেড করা হয় সেই বিষয়ে। ফরেক্স মার্কেটে সোজাকথায় মুদ্রা ট্রেড করা হয়। উদহারণসরুপ, আমেরিকার কারেন্সি হছে ডলার, ব্রিটেনের কারেন্সি হচ্ছে পাউন্ড। ফরেক্স মার্কেট এ আপনি ডলার বিক্রয় করে পাউন্ড অথবা পাউন্ড বিক্রয় করে ডলার কিনতে পারেন। ডলার অথবা পাউন্ড ব্যাতিতও আর বিভিন্ন দেশের কারেন্সি আছে যা ফরেক্স মার্কেট এ আপনি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন।
মেজর কারেন্সিঃ
কারেন্সি চিহ্নের প্রথম তিন অক্ষর ঐ দেশের নাম নির্দেশ করে। যেমনঃ jpy দিয়ে জাপানের নাম বোঝানো হয়েছে। এই কারেন্সি গুলো কে মেজর কারেন্সি বলা হয়েছে কারন এইগুলো সবচেয়ে বেশী ট্রেড হয়। আপনারা দেশের নাম দেখেই বুঝতে পারছেন কেন তারা মেজর।এছাড়া প্রত্যেক কারন্সির নিকনেম আছে।এগুলো গুরুত্বপূর্ণ না।
মেজর ক্রস পেয়ারঃ
যেসব কারন্সি পেয়ার বেশী ট্রেড হয় সেইগুলোই মেজর কারেন্সি পেয়ার। যেহেতু ডলার দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশী ট্রেড হয় তাই ক্রস পেয়ারের একপাশে ডলার থাকবে।
Pair | Countries | FXGeekSpeak |
EUR/USD | Euro zone / United States | “euro dollar” |
USD/JPY | United States / Japan | “dollar yen” |
GBP/USD | United Kingdom / United States | “pound dollar” |
USD/CHF | United States/ Switzerland | “dollarswissy” |
USD/CAD | United States / Canada | “dollarloonie” |
AUD/USD | Australian dollar/us | “aussie -dollar” |
আরও কিছু মাইনর কারেন্সি ক্রসঃ
Euro crosses:
Pair | Countries | FXGeekSpeak |
EUR/USD | Euro zone / United States | “euro dollar” |
EUR/GBP | Euro zone / United Kingdom | “euro pound” |
EUR/CAD | Euro zone / Canada | “euro loonie” |
EUR/CHF | Euro zone / Switzerland | “euroswissy” |
EUR/AUD | Euro zone / Australia | “euro aussie” |
EUR/NZD | Euro zone / New Zealand | “euro kiwi |
Yen Crosses:
Pair | Countries | FXGeekSpeak |
EUR/JPY | Euro zone / Japan | “euroyen” |
GBP/JPY | United Kingdom / Japan | “pound yen” |
CHF/JPY | Switzerland / Japan | “swissy yen” |
CAD/JPY | Canada / Japan | “loonie yen” |
AUD/JPY | Australia / Japan | “aussie yen” |
NZD/JPY | New Zealand / Japan | “kiwi yen” |
এইসব কারেন্সি পেয়ারের মধ্যে EURO/USD,USD/JPY,GBP/USD,USD/CHF,AUD/USD সবচেয়ে বেশী ট্রেড হয়।
এখানে পেয়ার নামকরণ বুঝতে কিছু সমস্যা হতে পারে ।যেমনঃ স্টারলিং-ইয়েন ক্রসকে আমরা ইয়েন ক্রস বলে থাকি। কিন্তু একে তো ইয়েন/ স্টারলিং বলা যেত ! এর কারন অনেক আগে থেকেই শক্তিশালী কারেন্সির বিপরীতে দুর্বল কারেন্সি লেখা হয়ে থাকে। ইয়েনের চেয়ে স্টারলিং শক্তিশালী তাই ইয়েন আগে লেখা হয়। এখানে প্রথম কারন্সিকে বলা হয় বেস কারন্সি এবং শেষ কারেন্সিকে বলা হয় কাউণ্টার কারেন্সি। এছাড়াও গোল্ড ট্রেডিং আমাদের দেশে জনপ্রিয়।
এই কারন্সিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ট্রেড হয় EUR/USD। মার্কেটের ৮৪।৯% মুদ্রা বিনিময় হয় দিয়ে। বাকি ৩৯.১% এবং ১৯% মুদ্রা বিনিময় হয় ইউরো এবং ইয়েনের মাধ্যমে।
এই কারেন্সি গুলার মধ্যে ৭৫ ভাগ ট্রেডার ট্রেড করে থাকে ।সুতরাং কারেন্সিগুলার রাজা বলা যেতে পারে। এবং আইএমএফ মতে সারা বিশ্বের ৬২ ভাগ ফরেন রিজার্ভ আছে us dollar। কারন বেশিরভাগ ব্যবসায়িক কারেন্সি বিনিময় ডলারে হয়ে থাকে।
ট্রেডিং সেশানঃ
ফরেক্স মার্কেট সপ্তাহের ৫ দিন সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত খোলা থাকে। ফরেক্স ট্রেডিং সেশান চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
- এশিয়ান সেশানঃ সকাল ৬টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চালু থাকে।(বাংলাদেশ সময়)
- অস্ট্রেলিয়ান সেশানঃ রাত ৩টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত চালু থাকে।
- লন্ডন সেশানঃদুপুর ১টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত চালু থাকে
- আমেরিকান সেশানঃ সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ৩ টা পর্যন্ত চালু থাকে।
ফরেক্স মার্কেটে কিভাবে ট্রেড করবেনঃ
শেয়ার মার্কেটের নিয়ম হচ্ছে যেকোনো শেয়ারের মূল্য সে দেশের মুদ্রার বিপরীতে নির্ধারিত হবে। যেমন, আমাদের দেশের শেয়ার মার্কেটে কোনো শেয়ারের মূল্য টাকায় নির্ধারিত হয়। ফরেক্স মার্কেটে এভাবে নির্ধারিত হয় না। এজন্য ফরেক্স মার্কেটে কারেন্সি পেয়ার ব্যবহার করা হয়।
যেমনঃ EUR/USD (ইউরো/ইউএসডি) একটি কারেন্সি পেয়ার। বর্তমানে 1 EUR/USD = 1.3120 . এর মানে হচ্ছে ১ ইউরো দিয়ে আপনি ১.৩১২০ ডলার পাবেন।অর্থাৎ আপনি যদি ১ ইউরো কে ডলারে বদলাতে চান তবে আপনি ১.৩১২০$ পাবেন। ফরেক্স মার্কেটে কোন কারেন্সি পেয়ার হচ্ছে দুইটা কারেন্সির অনুপাত। কারন্সি পেয়ারের মুভমেন্ট দশমিকের পরে ৩ আর ৪ নাম্বার ঘরেই বেশি হয় তাই একে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ ডিজিট ট্রেড হয়ে থাকে।
তেমনি 1 AUD/USD = 1.0180 , এর মানে হচ্ছে ১ অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিয়ে আপনি ১.০১৮০ আমেরিকান ডলার পাবেন।
1 GBP/USD = 1.6150 , এর মানে হচ্ছে ১ পাউন্ড দিয়ে আপনি ১.৬১৫০ আমেরিকান ডলার পাবেন।
1 GBP/USD = 1.6150 , এর মানে হচ্ছে ১ পাউন্ড দিয়ে আপনি ১.৬১৫০ আমেরিকান ডলার পাবেন।
এখন ফরেক্স মার্কেটে ট্রেড করবেন কিভাবে ? আমাদের দেশে শেয়ার মার্কেট দিয়েই বলি । আমরা ডিএসি তে এবিব্যাঙ্ক কিনলাম ৫০ টাকা রেটে ১ লট ।এই রেট যখন ৫৫ পর্যন্ত যাবে তখন আমরা বিক্রি করব। ফরেক্স মার্কেটেও একই রকম। আপনি ইউরো/ডলার রেট আছে ১.৩২০০,আপনি এই রেটে ১ লট কিনলেন। তারপর যখন রেট ১.৩২৫০ পর্যন্ত যাবে তখন বিক্রি করে দিলেন। এভাবে আপনি কারেন্সি ক্রয় বিক্রয় করতে পারবেন।
ফান্ডামেনটাল এনালাইসিস করে কিভাবে ট্রেড বসাবেন সেই বিষয়ে আলোচনা করছি।ফান্ডামেনটাল এনালাইসিসের এটা বেসিক ধারণা। এটি অনেক বড় বিষয়।
ইউরো/ডলারঃ যদি আপনার মনে হয় US অর্থনীতি দুর্বল হতে থাকবে তখন ইউরো/ডলার বাই দিতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে ইউরো কিনতে হবে এবং রেট যত উপরে উঠবে তত আপনার প্রফিট হবে। তেমনি যদি আপনার মনে হয় ইউএস অর্থনীতি শক্তিশালী হবে তবে সেল দিতে হবে। এক্ষেত্রে মার্কেট নামলে আপনার প্রফিট হবে।
অন্যান্য কারেন্সি পেয়ারের ক্ষেত্রেও একই জিনিস দেখতে হবে। যেমনঃ Yen র ক্ষেত্রে জাপানী অর্থনীতি সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে।
পিপস এবং পিপেটসঃ
ফরেক্স মার্কেটে কারেন্সি পেয়ারের দশমিকের পরের চতুর্থ সংখ্যার প্রতি একক পরিবর্তনকে ১ পিপ বলে। যেমনঃ ইউরো/ডলার ১.৩২৩০ রেটে কিনলেন ।এখন মার্কেট ১.৩২৫০ পর্যন্ত উঠলো এতে আপনার ৩০ পিপ প্রফিট হল।আবার যদি ১.৩২২০ রেটে সেল দিলেন এরপর মার্কেট নেমে ১.৩২০০ পর্যন্ত গেল তখন আপনার প্রফিট হবে ২০ পিপ।
একইভাবে ৫ বা ৩ ডিজিটের ক্ষেত্রে একে পিপেটস বলে। যেমনঃ ইউরো/ডলার রেট ১.৩২২০৫ কিনলেন ।মার্কেট ১.`৩২৫১০ পর্যন্ত উঠলো।তাহলে মার্কেট মুভমেন্ট হয়েছে ৩০ পিপ ৫ পিপেটস অর্থাৎ ।৩০৫ পিপেটস মুভমেন্ট হয়েছে।
লট /ভলিউমঃ
ফরেক্স মার্কেটে আমরা প্রতি পিপস মুভমেন্টে লাভ করতে পারি। অর্থাৎ প্রাইস ১.১৭১০ থেকে ১.১৭২০ এ গেলে আমাদের ১০ পিপস লাভ বা লস হবে। লট/ভলিউমের মাধ্যমে আমরা নির্ধারণ করে দিবো যে প্রতি পিপস আমাদের অনুকূলে বা প্রতিকূলে গেলে আমাদের কি পরিমান লাভ বা লস হবে।
ফরেক্স ব্রোকারে তিন ধরনের লট থাকে।
- স্ট্যান্ডার্ড লট;
- মিনি লট;
- মাইক্রো লট।
স্ট্যান্ডার্ড লটের ক্ষেত্রে ১ লট =১০$/পিপস, ০.`১ লট=১$/লট ; ০.০১=০.১$/লট । যেমনঃ আপনি ১.`৩২২০ তে ১ লট কিনে বাই দিলেন।মার্কেট ১.`৩২৫০ উঠার পর বিক্রি করলেন। এক্ষেত্রে আপনার লাভ হয়েছে ৩০ পিপ।তাহলে আপনার প্রফিট হয়েছে=৩০*১০$=৩০০$।
কারন ১ লট=১০$।
তেমনি ০.১লট কিনলে প্রফিট হবে ৩০*১$=৩০$।
কারন ১ লট=১০$।
তেমনি ০.১লট কিনলে প্রফিট হবে ৩০*১$=৩০$।
০.০১ লট কিনলে প্রফিট হবে=৩০*০.১=৩$।
সব কারেন্সির ক্ষেত্রে একই হিসাব।
মিনি লটের ক্ষেত্রে ১ মিনি লট=১$/পিপ্স ;০.১লট=০.`১$/পিপস;০.০১লট =০.`০১$/পিপস।প্রফিট হিসাব স্ট্যান্ডার্ড লটের মত।
মাইক্রো লটের ক্ষেত্রে ১ মাইক্রো লট=০.১$/পিপস; ০.১=০.০১$/পিপস; ০.০১লট=০.`০০১$/পিপস।
স্প্রেডঃ ফরেক্স ব্রোকারে ট্রেড ওপেন করলে দেখবেন ট্রেড কিছু লসে শুরু হয়েছে। কারন ব্রোকারগুলো প্রতি ট্রেডে কিছু ফি কেটে নেয়। এই ফি কেই স্প্রেড বলে। যেমনঃ ইউরো/ডলার ক্ষেত্রে বাই/ সেল রেট =১.৩২২২/১.৩২২০।
এখন আপনি বাই দিলে ট্রেড ওপেন হবে ১.৩২২২ রেটে ,কিন্তু ট্রেডে পিপ গননা শুরু করতে হবে ১.৩২২০ থেকে ।অর্থাৎ ৩২২০ যত উপরে উঠবে তত পিপ আপনার প্রফিট হবে এবং এই রেটগুলোর মধ্যে যে ২ পিপ পার্থক্য দেখতে পাচ্ছেন তাই স্প্রেড। স্প্রেড কারেন্সি ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে।
লেভারেজঃ
লেভারেজ সুবিধা হচ্ছে আপনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ট্রেড করতে পারবেন। কারন ১ স্ট্যান্ডার্ড লট কিনতে ১ লক্ষ ডলার লাগবে ,যা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয় ।সেক্ষেত্রে লেভারেজ সুবিধা নিয়ে অল্প ডলার দিয়েই ট্রেড করতে পারবেন। লেভারেজ ১:১ থেকে ১:৫০০ পর্যন্ত নেয়া যাবে। এটা সব ব্রোকারে গেলেই দেখতে পারবেন। আপনার ডিপোসিট আছে ১০০$ ।
কিন্তু এই ডলার দিয়ে আপনি বেশী বড় লট ওপেন করতে পারবেন না। তাই আপনি যদি ১:৫০০ লেভারেজ সুবিধা নেন তবে আপনার ব্যালেন্স হবে =১০০*৫০০=৫০০০০$।
সুতরাং আপনি এই পরিমান অর্থ সুবিধা নিয়ে বড় লট ওপেন করতে পারবেন।
ব্রোকার লোন আপনাকে ঠিকই দিবে। লাভ হলে তো ভালোই, লস এর ক্ষেত্রে আপনার লস যদি কোন সময় আপনার ক্যাপিটাল এর সমান হয়, তাহলে সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ট্রেড ক্লোজ হয়ে যাবে। ব্রোকার কোন অবস্থাতেই আপনার যা ক্যাপিটাল আছে, তার থেকে বেশি লসে আপনার ট্রেড চলতে দিবে না। এইটাকে ফরেক্সে মার্জিন কল বলে, বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেটে বলে ফোর্সড সেল।ভয় পাবার বিষয় । ফরেক্স যেমন খুব লাভজনক বেবসা তেমনি রিস্কও বেশী। তাই একটু পড়াশুনা করে ফরেক্স মার্কেটে নামলে ভালো।
অর্ডার টাইপঃ
স্টপ লস/টেক প্রফিটঃ
ধরুন, আপনি ১.৩৫৪০ তে একটি বাই ট্রেড ওপেন করলেন। আপনি চাচ্ছেন ৫০ পিপস লাভ করবেন এবং ৫০ পিপসের বেশি লস করবেন না। তাহলে আপনি ৫০ পিপস স্টপ লস এবং ৫০ পিপস টেক প্রফিট সেট করে রাখতে পারেন। আপনার কম্পিউটার বন্ধ থাকলে বা হঠাৎ প্রাইস বেড়ে বা কমে গেলে, স্টপ লস বা টেক প্রফিটের প্রাইসে অটোমেটিক ভাবে আপনার ট্রেড ক্লোজ হয়ে যাবে।
মার্কেট অর্ডারঃ
চিত্রে , বিড রেট মানে সেল, আস্ক রেট মানে বাই।বিড এবং আস্কের পার্থক্য হল ৩ স্প্রেড। এখন আপনি বাই দিতে হবে আস্ক রেটে বাই দিতে হবে অর্থাৎ ১.`৭৪৪৮ রেটে। তেমনি সেল দিতে হলে ১.`৭৪৪৫ রেটে সেল দিতে হবে।
ট্রেইলিং অর্ডারঃ
আপনি ১.৩১১০ তে ট্রেড বাই ওপেন করলেন ।টেক প্রফিট দিলেন ১.৩১৬০,স্টপ লস দিলেন ১.`৩০৫০।
এখন আপনি ১৫ পিপ ট্রেইলিং চালু করলেন।তাহলে মার্কেট উপরে উঠে ১.৩১২৫ রেটে উঠলে আপনার স্টপ লস হবে ১.৩১১০।
এরপর প্রতি পিপ বাড়ার সাথে সাথে ১পিপ করে স্টপ লস বারতে থাকবে। তখন স্টপ লস হবে ১.৩১১১।ট্রেইলিং যদি ২০ পিপ সেট করেন তবে আপনার বাই রেট থেকে ২০ পিপ উঠলে আপনার ঐ ট্রেড আর লসে বন্ধ হবে না। ট্রেইলিং অর্ডার স্টপ লস কমাতে ব্যবহার করা হয়।
ফরেক্স মার্কেটে টিকে থাকতে হলে তিনটি বিষয়ে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে। প্রথমটি হল কনটেণ্ট। অর্থাৎ আপনাকেফরেক্স মার্কেটের ভিতর এবং বাইরের সব তথ্য জানতে হবে। যেমনঃ লট,স্প্রেড,এক কারেন্সির উপর আরেক কারেন্সির প্রভাব। আমাদের অবশ্যই আভ্যন্তরীণ তথ্য সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। যেহেতু আমরা আমাদের ট্রেডিং সিদ্ধান্ত বর্তমান কালে নিব তাই মার্কেটের সময় এবং কারেন্সি রেট সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। প্রতিদিন ট্রেড করার জন্য প্রতিমুহূর্তের খবর আমাদের ট্রেডিং প্লাটফর্ম বা অন্য কোন ভাবে জানতে হবে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হল মেকানিক্স। অর্থাৎ আপনাকে একটা ট্রেডিং পদ্ধতি তৈরি করতে হবে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার ট্রেড বসাবেন এবং ট্রেড বন্ধ করবেন। ট্রেডিং পদ্ধতির সামান্য ভুলে আপনার হাজার ডলার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।নেটে অনেক ট্রেডিং সিস্টেম পাবেন। ট্রেডিং সিস্টেমে ট্রেড বসানো বা বন্ধ করার সাথে সাথে মানি ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকতে হবে।
তৃতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নিয়মানুবর্তিতা । প্রতিটি ট্রেডে আপনাকে ১০০ ভাগ ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে। আপনার ডিসিপ্লিনের উপর আপনার লাভ/ ক্ষতি নির্ভর করবে।
কিছু ট্রেডিং নিয়ম যা আপনাকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে পারেঃ
1. মার্কেটে আপনাকে ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে। ডিসিপ্লিন আপনাকে বেশি লাভ দিবে এবং আপনার পকেট থেকে কম টাকা যেতে সাহায্য করবে। ফরেক্স মার্কেটে সাফল্যের সূত্রঃ ডিসিপ্লিন= অতিরিক্ত লাভ।
2. প্রতি ট্রেডে আপনাকে ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে। কোন ট্রেডে আপনি ১০০ ভাগ নিশ্চিত না হয়ে ট্রেড বসাবেন না।
3. যদি আপনার একাউণ্টে ডলার কম থাকে সে ক্ষেত্রে লট কমিয়ে দেবেন। যেমনঃ আপনার ৫০০$ ব্যালেন্স নেমে ১০০$ হয়েছে ,তখন অবশ্যই ০.০৫ লট ট্রেড করবেন না ,০.১ ব্যবহার করতে পারেন। এতে আপনার মার্জিন কল খাবার সম্ভাবনা কমে যাবে।
4. আপনার ট্রেডে ১০০ পিপ প্রফিট আছে । এখন অতি লোভে ট্রেড ধরে রাখলেন। যা আপনার ট্রেডিং সিস্টেমের সাথে যায় না। সেক্ষেত্রে মার্কেট বিপরীত দিকে যাওয়া শুরু করলে আপনার লাভের ট্রেড লস হয়ে যাবে। এই অবস্থায় আমরা সবাই কোন না কোন সময়ে পরি। এই ধরনের অবস্থা থেকে মুক্তির চেষ্টা করতে হবে। কম প্রফিট ধরে রাখলে পরবর্তী ট্রেডে আপনি লাভ করতে পারবেন।
5. ধরুন আপনি এক ট্রেডে ৫০ পিপ প্রফিট করলেন। এখন আবার ট্রেড ওপেন করলে আপনার লস অবশ্যই ৫০ পিপের নিচে যাতে না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। দুটি ট্রেডের গড় যদি লস হয় তবে ঐদিনের ট্রেড খুবই খারাপ হয়েছে ধরে নিতে হবে। এক্ষেত্রে স্টপ লস ব্যবহার করতে পারেন।প্রতিদিনের প্রফিট প্রতিদিন ধরে রাখতে হবে।
6. সহজ ট্রেডিং সিস্টেম তৈরি করুন এবং কোনভাবেই ট্রেডিং সিস্টেম পরিবর্তন করবেন না। আপনার সিস্টেম যদি বলে ১০ পিপ প্রফিট তবে তাই ধরতে হবে ,যদিও ঐদিন আপনি ধরে রাখলে ৫০ পিপ প্রফিট হত।সঠিক সময়ে ট্রেড বন্ধ করলে লসের পরিমান কমে যাবে।
7. আপনি অবশ্যই আপনার উপর আস্থা রাখবেন। আপনি যে সিদ্ধান্ত নিবেন তাই ঠিক মনে করবেন। আমরা ট্রেড করার সময় আরেকজনের সিগনাল অনুসরন করি। এতে হয়ত কিছু ট্রেড লাভ করবেন কিন্তু আপনি দ্রুত পঙ্গুত্ব বরন করবেন। কারন ট্রেডিং আপনাকেই করতে হবে।আরেকজনের ট্রেড অনুসরন করলে লস খাউয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
8. যদি আপনি একদিনে দুইটি বা তিনটি ট্রেড লস করেন তবে ঐ দিন আর মার্কেটে না বসাই ভালো। ধরুন আপনার ১০,০০০$ আছে, সেক্ষেত্রে আপনার প্রতিদিনের লস কোন ভাবেই ৫০০$ নিচে নামানো যাবে না।ট্রেড লস খেলে হতাশ না হয়ে পরের দিন আবার বসেন। তাহলে প্রফিট করবেন। আমাদের ট্রেডারদের বড় সমস্যা হচ্ছে তারা প্রতিদিনকার লস প্রতিদিন তুলতে চায়।এতে অনেক লস হয়ে যায়। আমার মতে, প্রতিদিন দুইটি ট্রেড লস খেলে সাথে সাথে পিসি অফ করে দিবেন, পরের দিন বসবেন।
9. লস নিয়ন্ত্রণ করা শিখতে হবে। আপনার কিছু ট্রেড লস হবেই। তাই লস যতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন ততই আপনি মার্কেটে টিকে থাকতে পারবেন।
10. অনুমানের উপর নির্ভর করে ট্রেড করবেন না। আমি আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি যখন অনুমানের উপর নির্ভর করে ট্রেড ওপেন করেছি তখন প্রতি ট্রেডে ৫০ পিপ প্রফিট হয়েছে। কিন্তু কিছুদিন পর দেখি আর ৫০ পিপ যায় না। স্টপ লস ব্যবহার না করার ফলে লস অনেক বেশি হয়ে যায়।বেশিরভাগ ট্রেডারদের ক্ষেত্রে এরকম ঘটে। আপনি আপনার ট্রেডিং সিস্টেম যা বলে তাই করবেন।
11. টাকা খোয়ানোর জন্য সবসময় প্রস্তুত থাকবেন। কারন আপনার কিছু ট্রেড লস হবেই। কিন্তু টাকা খোয়ানোর জন্য প্রস্তুত থাকলে মানসিক শান্তি আসবে।
12. প্রতিদিন অল্প অল্প করে প্রফিট করবেন।একবারে সব খেতে চাইলে সব হারাবেন। ফরেক্স মার্কেটে মানুষ টিকতে পারে না অতিলোভের কারনে। লোভ সংবরণ করুন কোটিপতি হন।
13. একই ধরনের ট্রেড প্রতিদিন করুন। মানে হচ্ছে আপনি যে সব নিয়ম মেনে ট্রেড করেন সেইগুলো অনুসরন করুন প্রতি ট্রেডে। প্রতিটি নিয়ম প্রতিদিন অনুশীলন করুন। আমার ৮ নাম্বার নিয়ম শিখতে ৪ মাস লেগেছে।
14. কখনও অতিরিক্ত এনালাইসিস করবেন না।দ্বিধা করবেন না।আপনি ট্রেড বসাতে একটু দেরী করলে দেখবেন আপনার প্রফিট অনেক কমে গেছে। অনেকেই আছেন মার্কেট দেখছেন উপরে উঠছে কিন্তু অপেক্ষা করছেন কখন তার ইপ্সিত রেট আসবে তখন ট্রেড বসাবেন। কিন্তু এতে অনেক দেরী হয়ে যাবে। যেমনঃ আপনার হেইকেন আসি বার সবুজ দেখাচ্ছে ,কিন্তু আপনি অপেক্ষা করছেন আরেকটা বার উঠুক ।কিন্তু এতে আপনার অনেক দেরী হয়ে যেতে পারে ।আপনি যেই বারে বসাতে চাইছেন সেই বার থেকে মার্কেট উল্টাদিকে বাক নিতে পারে। তাই দ্বিধা করবেন না।
15. স্টপ লস ব্যবহার করবেন। আমার মতে, ২৫ বা ৩০ পিপ।কাছের সাপোর্ট বা রেসিসট্যান্স, পিভট লাইন ব্যবহার করতে পারেন।
16. মার্কেট আপনার আমার জন্য বসে থাকবে না। সে তার আপন গতিতে চলবে এবং যে দিকে যাবে সেটাই সঠিক দিক । মার্কেট কে সম্মান করতে হবে।
আশা করছি, এই নিয়মগুলো অনুসরন করলে ট্রেড লস খাওয়ার পরিমান কমে যাবে। এই নিয়মগুলো আমি আমার প্রতি ট্রেডে অনুসরন করার চেষ্টা করি। সবগুলো এখনো তুলতে পারিনাই। চেষ্টা করছি।
সবশেষে ওয়ারেন বাফেটের ট্রেডিং নিয়ম দিয়ে শেষ করছি, আমার মতে স্টক মার্কেটে টিকে থাকার সবচেয়ে সহজ সূত্র।
“Rule No.1 is never lose money. Rule No.2 is never forget rule number one.”
0 comments:
মন্তব্য করুন